পেনশনের টাকা কে পাবেন, ছেলে না স্ত্রী? জানাল হাইকোর্ট

Allahabad High Court Family Pension case major verdict has been handed down

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: পারিবারিক পেনশন (Family Pension) নিয়ে যুগান্তকারী রায় জানিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। একজন কর্মচারী চাইলেই প্রাপ্য পেনশনের জন্য তাঁর স্ত্রী, কন্যা অথবা ছেলেকে মনোনীত করতে পারেন? এমন প্রশ্নেই, এলাহাবাদ আদালত জানিয়েছে, পারিবারিক পেনশন কোনও ইচ্ছা বা দাতব্য নয়, বরং এটি একটি সংবিধিবদ্ধ অধিকার। পেনশনের অধিকার নিয়ে এক বিধবা নারীর করা মামলায় তাঁর পক্ষে রায় দিয়েছে আদালত। কর্মচারীর মৃত্যুর পর তাঁর পেনশনের উপর কার অধিকার থাকে সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারকরা।

স্বামীর পেনশনে প্রথম অধিকার বিধবা স্ত্রীয়ের

প্রয়াত সহকারি শিক্ষক প্রভু নারায়ণ সিংয়ের মৃত্যুর পর পারিবারিক পেনশনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। তবে কর্তৃপক্ষ তার দাবি প্রত্যাখ্যান করে দিয়ে জানায়, পেনশনের নথিতে তাঁর নাম উল্লেখ নেই। বরং ওই ব্যক্তি নাকি ছেলে অতুল কুমার সিংকে মনোনীত করেছিলেন। কর্মকর্তারা বলেন, স্ত্রীয়ের ছবিটিও আবেদনের তৃতীয় অংশ ছিল না। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন রাখেন ওই মহিলা।

তাঁর বক্তব্য ছিল, তিনি প্রভু নারায়ণ সিংয়ের আইনত বিবাহিত স্ত্রী। সম্পর্ক প্রমাণের স্বার্থে গ্রাম প্রধানের শংসাপত্র এমনকি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য 2015 সালের পারিবারিক আদালতের লিখিত নির্দেশ জমা করেন তিনি। যেখানে, প্রতিমাসে পেনশন হিসেবে তাদের 4,000 টাকা করে অনুমোদন করা হয়েছিল। এবার সেই মামলায় রায় জানালো, এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

বিধবা স্ত্রীয়ের আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট একেবারে স্পষ্ট জানায়, পারিবারিক পেনশনভোগীদের তালিকায় আইনত বিবাহিত স্ত্রীকে প্রথম অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিধি 7 (4) অনুযায়ী, মৃত কর্মচারীর পেনশন প্রথমে পাবেন তাঁর জীবিত স্ত্রী। এদিকে মৃত ব্যক্তির পেনশনের জন্য তাঁর ছেলে অতুল কুমারকে মনোনীত করা হলেও আদালতের পর্যবেক্ষণ, বাবার মৃত্যুর সময় বড় ছেলের বয়স ছিল 34 বছর এবং ছোট ছেলের বয়স ছিল 32। নিয়ম অনুযায়ী, পুত্র সন্তান কেবলমাত্র তখনই বাবার পেনশন পেতে পারেন, যখন তিনি নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে পারবেন। অর্থাৎ নির্ধারিত বয়সসীমা এবং অর্থনৈতিক নির্ভরতার মতো শর্তগুলি পূরণ হলে তবেই মৃত ব্যক্তির পেনশন পাবেন ছেলে।

মূলত এমন নিয়মেই গিয়েছিলেন ওই মৃত ব্যক্তির স্ত্রী। তার অর্থনৈতিক দুর্বলতাও আদালতের আরও বক্তব্য, পারিবারিক পেনশন আসলে একটি আইনি অধিকার, যা কর্মচারী তাঁর নিজের ইচ্ছায় কোনও মনোনয়ন বা কার্যধারা দ্বারা প্রত্যাহার করতে পারেন না। যদিও এমন রায়ের আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট কেরালা হাইকোর্টে সাথী কুমারী আম্মার মামলার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে।

অবশ্যই পড়ুন: KKR-র তুরুপের তাস এবার LSG-র ঘরে, বড় চাল গোয়েঙ্কার

নিয়ম কী বলে?

ভারত সরকারের নিয়ম 6 এ বলা হয়েছে, কর্মচারীকে কেবলমাত্র পরিবারের সদস্যদের পক্ষে মনোনয়ন দিতে হবে। বিধি 3 এর অধীনে একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র তাঁর আইনত বিবাহিত স্ত্রী, পুত্র, কন্যা এবং বাবা-মাকে মনোনয়ন দিতে পারেন। তবে পেনশনের জন্য মনোনীত করলেও আইনতভাবে মৃত ব্যক্তির পেনশনের প্রথম অগ্রাধিকার পাবেন তাঁর বিধবা স্ত্রী। এই অগ্রাধিকার এর নিয়ম 7 (4) অনুযায়ী সংশোধন করা হয়েছে। নিয়মে বলা হয়েছে, যদি মৃত ব্যক্তির স্ত্রী না থাকেন তবে সেই পেনশনের অর্থ পাবেন তাঁর পুত্র বা কন্যা সন্তান। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বাবার সাথে সম্পর্ক প্রমাণ করতে হবে তাঁদের।

Leave a Comment