বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মিউচুয়াল ফান্ড সহ একাধিক বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রলোভন সত্ত্বেও ভারতীয়দের ভরসা ধরে রেখেছে দেশের সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান পোস্ট অফিস (Indian Post Office)। তবে ডাক বিভাগে নির্ঝঞ্ঝাটে অর্থ সঞ্চয় করা গেলেও খারাপ পরিষেবা, অযথা হয়রানি, পোস্ট অফিস কর্মীদের বাজে ব্যবহার সহ একাধিক অভিযোগ থাকে গ্রাহকদের। এবার সেই সব অভিযোগের তালিকায় ঢুকে পড়ল নতুন এক অভিযোগ। পোস্ট অফিস গ্রাহকদের একাংশের দাবি, বর্তমানে ভারতীয় ডাক বিভাগের বিভিন্ন শাখায় জোর করে অ্যাকাউন্ট খোলানো বা বন্ধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যদিও পোস্ট অফিস এমন অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছ, ডাক বিভাগে অ্যাকাউন্ট খোলা বা বন্ধ সম্পূর্ণ গ্রাহকদের ঐচ্ছিক বিষয়।
পোস্ট অফিস নিয়ে বড় অভিযোগ গ্রাহকদের
শহর কলকাতা সহ রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের পোস্ট অফিস গ্রাহকদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ডাক বিভাগের অধীনে কোনও প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেই টাকা দাবি করতে গেলে বা অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে গেলে বেশ কিছু ক্ষেত্রে পোস্টমাস্টার বা কর্তৃপক্ষ নতুন কোনও প্রকল্পে অ্যাকাউন্ট খুলতে বলছেন। এখানেই শেষ নয়, নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে রাজি না হলে সঞ্চিত অর্থ পেতে দেরি হবে বলেও জানানো হচ্ছে ডাক বিভাগের তরফে।
ডাক বিভাগের ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বলছেন, পুরনো অ্যাকাউন্টের টাকা তুলতে গিয়ে অনেক সময় বাধ্য হয়ে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে হচ্ছে। অনেকেই আবার বেশি টাকার অ্যাকাউন্ট ভুলতে চাইলে তাঁকে জোর করে কম টাকার অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
অবশ্যই পড়ুন: শিয়ালদা, হাওড়ার ১০০টি ট্রেনের সময় বদল করল পূর্ব রেল, দেখুন নতুন সময়সূচি
অভিযোগ অস্বীকার করছে পোস্ট অফিস
ভারতীয় ডাক বিভাগকে ঘিরে গ্রাহকদের একের পর এক অভিযোগ নস্যাৎ করেছে পোস্ট অফিস। ভারতীয় পোস্ট অফিস কর্মীদের দাবি, একজন গ্রাহক কোন অ্যাকাউন্ট খুলবেন এবং কোন অ্যাকাউন্ট খুলবেন না সেটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাছাড়া কোনও প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেই অর্থ স্থানান্তরিত হয় গ্রাহকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে। ফলে এই অ্যাকাউন্ট থাকতেই হয়।
অবশ্যই পড়ুন: সমস্যার সমাধান হবে নিমিষে, পাসপোর্ট অফিসের মতো পরিষেবা শুরু করল EPFO
এ নিয়ে উত্তরবঙ্গ দক্ষিণবঙ্গের পোস্টমাস্টার জেনারেল ঋজু গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, “পোস্ট অফিসকে কেন্দ্র করে গ্রাহকদের হয়রানি একেবারেই মেনে নেওয়া হবে না। ডাক বিভাগ কর্তৃপক্ষ যদি কাউকে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য চাপ দেন বা বাধ্য করেন তবে তিনি সংশ্লিষ্ট শাখার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানাতেই পারেন। যদিও আমরা ইতিমধ্যেই অভিযোগের ভিত্তিতে পোস্টমাস্টারদের সতর্ক করেছি। এরপরেও কিছু ঘটলে সেটা আদেশের অবমাননা।” এ নিয়ে অবশ্য কর্মী ইউনিয়নগুলি বলছে, গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট খোলানো হয় মূলত নির্দিষ্ট ডাকঘরের টার্গেট পূরণ করার জন্য। এর সাথে ডাক বিভাগের সরাসরি যোগ নেই।