প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় কড়া বার্তা হাইকোর্টের

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ৪২ হাজার ৯৪৯ জনকে ২০১৬ সালে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নিয়োগপত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসায় ২০২৩ সালে কলকাতা হাইকোর্টে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। এরপর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরিহারা শিক্ষকেরা।

প্রাথমিকে ৩২ হাজারের চাকরি মামলার শুনানি

এরপর ওই মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের চাকরি বাতিলের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এবার সেই মামলায় শুনানি পর্ব ছিল গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে।

আর সেই শুনানিতেই হাইকোর্টে চাকরিহারাদের তরফের আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্রের দাবি ছিল, টেট দুর্নীতির অভিযোগ গুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি আরও বলেন যে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে সিবিআই এখনও পর্যন্ত কোনও চার্জশিট দাখিল করেনি।

অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে প্রশ্ন আইনজীবীর

এছাড়াও এদিন আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র আদালতে প্রশ্ন করেন যে আবেদনকারীরা যে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা নথি জমা দিয়েছিলেন, সেখানে কম অ্যাকাডেমিক স্কোর থাকা সত্ত্বেও অ্যাপটিটিউড টেস্টে বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে, তার সত্যতা কতটা? এমনকি এই নথিগুলো কোনও হলফনামা দিয়ে জমা দেওয়া হয়নি, শুনানির মাঝপথে পেশ করা হয়েছে।

পাশাপাশি তাঁর মতে, মামলাকারীদের তরফে দুর্নীতির কোনও অভিযোগই নেই। কেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাহলে কেন সম্পূর্ণ টেট বাতিল করা হল না?

আরও পড়ুন: বারুইপুরে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল রেলের! বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ

পাল্টা প্রশ্ন বিচারপতির

এই আবহে চাকরিহারাদের তরফের আইনজীবীর সওয়াল শুনে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী পাল্টা জানতে চান যে, “এগুলো এখন কেন বলা হচ্ছে? তখন কেন এসব বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করেননি?” অন্যদিকে, চাকরি বাতিলের আওতায় থাকাদের সংখ্যা নিয়েও আইনজীবী বেশ কিছু বক্তব্য তুলে ধরেন। জানা গিয়েছে আপাতত এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে চলেছে আগামী ৭ জুলাই, সোমবার।

আপাতত এই মামলার চূড়ান্ত রায় শোনার মুখিয়ে রয়েছেন সকলে। কারণ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের এই মামলার রায় কেবল ৩২,০০০ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না, বরং রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিয়েও একটি স্পষ্ট বার্তা দেবে। আর নির্বাচনের আগেও এই রায় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে গোটা বাংলা জুড়ে।

Leave a Comment