সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দীর্ঘ 4 দশক পর আন্টার্টিকায় সমুদ্রপথে ভেসে বেড়ানো বিশ্বের সবথেকে বড় হিমশৈল A23A এবার শেষযাত্রার পথে। ধীরে ধীরে ছোট ছোট খন্ডে ভেঙে যাচ্ছে এই বিরাট বরফখন্ড। বিজ্ঞানীরা মনে করছে, আগামী নভেম্বরের পর হয়ত এর আর কোনও অস্তিত্বই থাকবে না।
কীভাবে জন্ম হয়েছিল A23A-র?
জানিয়ে রাখি, 1986 সালে আন্টার্টিকায় ফিল্শনার-রনি আইস শেলফ থেকে আলাদা হয়ে A23A হিমশৈলটি তৈরি হয়েছিল। মূলত বিরাট এক ফাটল থেকেই তখন এটি সৃষ্টি হয়েছিল, যেটিকে গ্র্যান্ড কাসমও বলা হয়। উল্লেখ্য, এর অস্তিত্ব ধরা পড়েছিল 1950 এর দশকে। সেখান থেকে বহু বছর ধরেই আন্টার্কটিকার কাছে রয়েছে এটি। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। মূলত ভেসে গিয়ে ওই হিমশৈল সাউথ জর্জিয়া আইল্যান্ডের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে।
BREAKING | After 40 years, the world’s largest iceberg A23a is finally breaking apart.
— Once bigger than Los Angeles (1,500 sq miles, over 1 trillion tons of ice), it drifted from Antarctica in 1986 and is now melting rapidly in the South Atlantic. pic.twitter.com/Q8MutAUQjX
— Ground Check (@groundcheck360) September 6, 2025
উল্লেখ্য, কিছু মাস আগে A23A-এর আয়তন ছিল আমেরিকার রোড আইল্যান্ড রাজ্যের সমান এবং ওজন প্রায় 1 ট্রিলিয়ন টন। তবে বর্তমানে এটি সংকুচিত হয়ে টেক্সাসের হিউস্টন শহরের সমান আকারে নেমে এসেছে। মানে ভাবতে পারছেন! প্রতিনিয়ত বরফ গলে যাচ্ছে এই হিমশৈলর। ব্রিটিশ আন্টার্কটিকার সার্ভের বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু মেজিয়ার্স সম্প্রতি জানিয়েছেন, বর্তমান দিনে দাঁড়িয়ে বিশ্বের সবথেকে বড় হিমশৈল D15A, যার আকার বর্তমান A23A-এর প্রায় দ্বিগুণ।
বিজ্ঞানীরা কী বলছে?
উল্লেখ্য, কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের বরফ বিশেষজ্ঞ টেড স্ক্যামবস বলেছেন, এটিকে দেখতে দারুণ লাগছে। প্রতিবারই এমন ঘটনা পৃথিবীর সামনে আসে। এমনকি বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেও বলেছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠে ভাসমান বরফ সরাসরি জলস্থর বাড়ায় না। তবে এর ভাঙন ও গলনের ফলে স্থলভাগের হিমবাহগুলি দ্রুত সমুদ্রে নেমে চলে আসে। আর সেটাই ভবিষ্যতে সমুদ্রপৃষ্ঠ উচ্চতা বাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
আরও পড়ুনঃ আবেদন করা যাচ্ছে না শ্রমশ্রী পোর্টালে, বিপাকে পরিযায়ী শ্রমিকরা! সবটাই ভাঁওতাবাজি?
এমনকি এও দাবি করা হচ্ছে, A23A ভেঙে গেলে সেরকম কোনও ক্ষয়ক্ষতি হবে না। তবে IPCC-র হিসাব বলছে, এখন বছরে 3.7 মিলিমিটার হারে সমুদ্র জলস্তর বাড়ছে। আর যদি এই এভাবে চলতে থাকে তাহলে এর পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বাড়বে। হ্যাঁ, 2050 সালের মধ্যে সমুদ্রের জলস্তর অন্তত 30 থেকে 60 সেন্টিমিটার বাড়বে আশঙ্কা করছে বিজ্ঞানীরা। এমনকি মুম্বাই, চেন্নাই বা সুন্দরবনে সমস্যা বাড়তে পারে।