প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: নন্দীগ্রামের মৃত নার্স দীপালি জানার মৃত্যুর ঘটনায় গত চার দিন ধরে রাজনৈতিক মহলে বেশ শোরগোল চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে নির্বাচন করা হলেও দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে পরিবারের দাবি মতো কল্যাণীর AIIMS হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিঙ্গুরে নিহত নার্স দীপালী জানার দেহ। আর তাতেই সেই রিপোর্টে উঠে এল একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
তদন্তের রিপোর্টে উঠে এল ভয়ংকর তথ্য
গত শনিবার অর্থাৎ ১৬ আগস্ট, পরিবারের দাবি মেনে সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে কল্যাণী AIIMS-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নন্দীগ্রামের নার্সের মৃতদেহ। এরপর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত শুরু হয়। আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পর মৃত নার্সের দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। এদিকে রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়ায় মৃত্যু হয়েছিল নার্সের। শারীরিক নির্যাতনের কোনও চিহ্ন ছিল না দেহে। কিন্তু কী কারণে এই আত্মহত্যা তা নিয়ে এখনও চলছে তদন্ত।
শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর
উল্লেখ্য, বেঙ্গালুরু থেকে নার্সিং পড়া শেষ করে বাড়ি ফিরেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের রায়নগরের দীপালি জানা। এরপর এক বান্ধবীর মাধ্যমে বোড়াই তেমাথা এলাকার ‘শিবম সেবাসদন’ নার্সিংহোমে কাজের সুযোগ পান। কিন্তু কাজে যোগদানের তিন দিনের মাথায় অর্থাৎ গত বুধবার, ১৩ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যার দাবি করলেও পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে দীপালিকে। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়।
আরও পড়ুন: চাকরির দাবিতে ফের সল্টলেকে বিক্ষোভ TET উত্তীর্ণদের! পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ একাধিক
এদিকে সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে নার্সের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের জালে এইমুহুর্তে নার্সিংহোমের মালিক ও দীপালির প্রেমিক রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, ধৃত রাধাগোবিন্দের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই নার্সের। বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন প্রেমিকা বিয়ে করতে বলায় বেঁকে বসেছিলেন ওই যুবক। সেই কারণে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন দীপালি। আবার নার্সিংহোমের মালিকও নাকি দীপালির সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। তাই এবার দু’জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।