সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ফের ইডির খপ্পরে পড়ল শিল্পপতি অনিল আম্বানি (ED on Anil Ambani)। তাঁর গ্রুপ সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত দিনের পর দিন যেন কঠোর হচ্ছে। হ্যাঁ, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আবারও ব্যাঙ্ক জালিয়াতি মামলায় রিলায়েন্স গ্রুপের অনিল আম্বানির ১৮টি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল। এর মধ্যে ব্যাঙ্ক জমা থেকে শুরু করে শেয়ার ও বিনিয়োগ সহ মোট ১১২০ কোটি টাকার অ্যাসেট রয়েছে। এর আগেও ৫০ কোটি টাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। আর নতুন অ্যাটাচমেন্ট যুক্ত হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত গ্রুপের বিরুদ্ধে মোট বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০,১১৭ কোটি টাকা।
কোন কোন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হল?
ইডির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এবার অনিল আম্বানির বাজেয়াপ্ত সম্পদের তালিকায় রয়েছে রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সাতটি সম্পত্তি, রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেডের দু’টি সম্পত্তি, রিলায়েন্স ভ্যালু সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের নয়টি সম্পত্তি। এর পাশাপাশি রিলায়েন্স ভেঞ্চার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড এবং অন্যান্য কিছু সংস্থার ব্যাঙ্ক ডিপোজিট, শেয়ার এবং বিনিয়োগ রয়েছে।
জানিয়ে রাখি, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইয়েস ব্যাঙ্ক রিলায়েন্স গ্রুপের দুটি সংস্থা আরএইচএফএল এবং আরসিএফএল-এ মোট ৫০১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল। তবে ২০১৯ সালের শেষে এগুলি নন পারফর্মিং অ্যাসেট হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে পরিশোধযোগ্য বকেয়া দাঁড়িয়েছিল আরএইচএফএল সংস্থার ১৩৫৩.৫০ কোটি টাকা এবং আরসিএফএল সংস্থার ১৯৮৪ কোটি টাকা। এদিকে ইডির তদন্তে উঠে আসে, এই দুই আর্থিক সংস্থা মিলে ১১,০০০ কোটি টাকার বেশি পাবলিক মানি পেয়েছিল। আর সেবির নিয়ম অনুযায়ী, রিলায়েন্স নিপ্পন মিউচুয়াল ফান্ড সরাসরি রিলায়েন্স গ্রুপে বিনিয়োগ করতে পারত না। এই কারণে ঘুর পথে ইয়েস ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই রিলায়েন্স গ্রুপের কোম্পানিতে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন: কেন দেরি হচ্ছে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের ১০,০০০ টাকা দিতে? কবে ঢুকবে? জানাল শিক্ষা দফতর
কীভাবে আত্মসাৎ করা হল এত টাকা?
রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এক সংস্থার নেওয়া ঋণ অন্য সংস্থার ঋণ শোধ করতে ব্যবহার করা হতো। সেই সূত্রে ১৩,৬০০ কোটি টাকার লোন এভারগ্রিন হিসাবে খরচ হয়। পাশাপাশি ১২,৬০০ কোটি টাকার বেশি ট্রান্সফার হয় রিলেটেড পার্টিতে, ১৮০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছিল মিউচুয়াল ফান্ড এবং ফিক্সড ডিপোজিটে, এবং বিল ডিসকাউন্টিংয়ের নামে বড়সড় অর্থ পরিক্রমাও চালানো হয়। আর সবথেকে বড় ব্যাপার, এই গ্রুপের ৪০,১৮৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে এবং নয়টি ব্যাঙ্ক এই লোন অ্যাকাউন্টটিকে ফ্রড অ্যাকাউন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সেই কারণেই আবারও অনিল আম্বানির উপর চড়াও হল ইডি।