ফের অভ্যুত্থানের পথে বাংলাদেশ! এবার এনাকে সরাতে হতে পারে বঙ্গভবন হানা

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ওপার বাংলার ইতিহাসে 2024 সালের 5 আগস্ট এক ঐতিহাসিক দিন! হ্যাঁ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সূত্র ধরে সেদিন বাংলাদেশের মানচিত্রে পুরো বদলে গিয়েছিল। হাসিনা জামানার অবসান ঘটিয়ে ছাত্র জননেতার নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হয় পদ্মা পাড়ে। তারপর সময় গড়িয়েছে। কিন্তু ফের সেই 5 আগস্টকে ঘিরেই উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছেছে। আর এবারের লক্ষ্য—রাষ্ট্রপতি মহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ।

গণঅভ্যুত্থানের দ্বিতীয় অধ্যায় এবার?

বলে দিই, গত বছরের আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে হাসিনা সরকারের পতন ঘটলেও আন্দোলনের নেতারা মনে করছে যে, কাজ এখনো হাসিল হয়নি। তাদের মতে, এই চুপ্পু রাষ্ট্রপতি ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রতীক হয়ে সিংহাসন দখল করে বসে রয়েছে। তাই তাকে অপসারণ করতে হবে। হ্যাঁ, তাকে সরিয়েই গণতান্ত্রিক শাসনের পথ তৈরি করতে চাইছে আন্দোলনকারীরা।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের কোনোরকম বিধান নেই। তিনি চাইলে নিজে থেকেই সরে যেতে পারেন। আবার তার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেও হতে পারে। কিন্তু নয়া পরিকল্পনা মাফিক বঙ্গভবনে চারপাশে জনমত তৈরি করে রাষ্ট্রপতিকে বহিষ্কার করে দেওয়ায় এখন তাদের লক্ষ্য।

বলে রাখি, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। গত বছর দুবার রাষ্ট্রপতিকে ঘেরাও করার চেষ্টা করা হয়। একবার মধ্যরাতে ছাত্র-জননেতা বঙ্গভবনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। আরেকবার 21 ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনার সফরের সময় তাকে ঘেরাও করার চেষ্টা করা হয়।

জুলাই মাসেই ঘোষণাপত্র

সূত্রের খবর, আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ হিসেবে এবার সামনে আসছে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র। কারণ জাতীয় নাগরিক পার্টির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি ঘোষণা করেছিলেন, সরকার নয়, তাদের পক্ষ থেকেই এবার এই ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হবে। আর তাতে থাকবে সাংবিধানিক বাতিল এবং গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান তৈরির দাবি। ফলে এখন অন্তর্বর্তী সরকার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি, সকলেই প্রশ্ন চিহ্নের মুখে।

এদিকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে হঠাৎ করে ছাত্র জননেতা রাস্তায় নেমে আসে এবং অবরোধ করে। ফলে সবকিছুই 5 আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতি বলে মনে করছে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ। এদিকে একই দিনে অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তরফে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছয় মাসের কারাদণ্ড ঘোষণা করায় উত্তেজনার পারদ আরও চরমে পৌঁছেছে। 

আরও পড়ুনঃ মধ্যবিত্তদের চাপ দিয়ে আবারও চড়ল সোনার দর, রুপো নিয়ে সুখবর! আজকের রেট

কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট?

এখনও ওপার বাংলার জন্য পরবর্তী রাষ্ট্রপতির নাম চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে জল্পনা চলছে যে, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস নতুন রাষ্ট্রপতি হতে পারেন। এমনকি ভবিষ্যতের সংসদ নির্বাচনের পর খালেদ জিয়ার নামও আলোচনা শিরোনামে উঠে আসছে।

তবে এবার রাষ্ট্রপতি অবসরের প্রক্রিয়ায় সেনাবাহিনীর ভূমিকাও থাকবে। কারণ আগের অভ্যুত্থানের সময় সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান বাঁধা দিয়েছিলেন। তবে এবার তারা কিছুটা নীরব ভূমিকা পালন করছে। সূত্র বলছে যে, সেনাপ্রধান সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করে ফেলেছেন। এমনকি তিনি ও মহম্মদ ইউনূস, দুজনেই খালেদ জিয়ার প্রত্যাবর্তন আশা করছে।

Leave a Comment