বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: গত 3 দশকে বারবার অশান্ত হয়ে উঠেছে ভারতের বন্ধু রাষ্ট্র নেপাল। চলতি মাসে ফের উত্তপ্ত নেপালের আরও এক ছবি দেখল বিশ্ববাসী। সোমবার থেকে শুরু হওয়া ছাত্র যুবদের Gen Z আন্দোলনে চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি।
শোনা যাচ্ছে, প্রবল বিক্ষোভের মাঝে পদত্যাগের পর এবার দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। আর ঠিক সেই আবহে, নেপালের একটা বড় অংশ ফের হিন্দু রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরব হয়েছেন।
তাঁদের বক্তব্য, নেপালকে বাঁচাতে গেলে আবার হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা প্রয়োজন। এদিকে, মাত্র এক দিনের মধ্যেই গোটা দেশে বিক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহকে (Balendra Shah) প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসাতে চাইছেন আন্দোলনকারী। কিন্তু কে এই বালেন্দ্র?
চিনে নিন বালেন্দ্র শাহকে
নেপাল নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী, কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা হলেও, আদতে দেশটির বিভিন্ন সামাজিক কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন তিনি। জানা যায়, টাইম ম্যাগাজিনে 2023 সালে জায়গা করে নিয়েছিলেন এই বালেন। গোটা বিশ্বের জনপ্রিয়তম 100 জন ব্যক্তির মধ্যে নাম ছিল তাঁর।
জানলে অবাক হবেন, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো সংবাদমাধ্যমও তাঁর কথা ফলাও করে ছাপিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালই সক্রিয় এই বালেন। নেপালের যুবসমাজও তাঁকে বেশ পছন্দ করেন। তবে শোনা যায়, প্রায়শই বিতর্কের মধ্যে থাকতে ভালবাসেন এই বালেন্দ্র। মাঝেমধ্যেই নাকি, নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে নানান বিতর্কিত পোস্ট করেন তিনি। অনেকেই বলছেন, নিজের ভাবনাচিন্তা দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে পেরেছেন বালেন্দ্র।
যদিও, বালেন্দ্র কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাঁর পরিবারের সাথেও দূর দূরান্ত পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলের যোগ নেই। তিনি আসলে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে র্যাপার হিসেবেও নিজের ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা করেন বালেন। তবে শেষ পর্যন্ত রাজনীতিতে যোগ না দিয়ে থাকতে পারেননি তিনি। রাজনীতির ময়দানে পা দিতেই কাঠমান্ডুর মেয়র হয়ে যান বালেন্দ্র। এরপর থেকেই যুব সমাজের হয়ে কথা বলতে শুরু করেন। 2023 সালে ভারতীয় সিনেমার বিরোধীতা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ট্রোলের শিকার হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও নিজের পথ থেকে সরে আসেননি বালেন্দ্র।
অবশ্যই পড়ুন: এবার সৌরভ গাঙ্গুলির অধীনে খেলবেন KKR স্টার আন্দ্রে রাসেল, কোন দলে?
নেপালের সংবাদমাধ্যম বলছে, বালেন্দ্র বেশ কয়েকবার নেপাল সরকারের নানান সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। সম্প্রতি সরকার বিরোধী আন্দোলনকেও সমর্থন করেন তিনি। ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে কাঠমান্ডুর মেয়র জানিয়েছিলেন, আয়োজকরা আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য বয়সসীমা বেঁধে দিয়েছেন। সেটা না হলে তিনিও ওই আন্দোলনে যোগ দিতেন। ।
মাই রিপাবলিক সিটিজেন নেটওয়ার্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, নেপালের যুবসমাজের একটা বৃহৎ অংশ বালেন্দ্রকে কাঠমান্ডুর মেয়রের পথ থেকে পদত্যাগ করে দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার অনুরোধ করছেন। নেপালের প্রাপ্তবয়স্করাও মনে করছেন, তাঁর হাতে নেপালের দায়িত্ব উঠলে সাধারণ মানুষ নিজের হক বুঝে নিতে পারবেন। ইতিমধ্যেই, কেপি ওলি বিরোধী এই বালেনকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে একাধিক পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে কাঠমান্ডুর মেয়রের দায়িত্ব ছেড়ে বালেন্দ্র শাহ দেশের প্রধানের আসনে বসবেন কিনা, সে কথা এখনও সর্বসমক্ষে জানাননি তিনি।