প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সম্প্রতি দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকার পথকুকুরদের স্থানান্তরের যে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট, তা নিয়ে গোটা দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক শোরগোল। তাইতো পথকুকুরদের অস্তিত্ব এবং সমাজে তাদের টিকে থাকার লড়াই নিয়ে পথে নেমেছে পশুপ্রেমীরা। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের আবেদন জানানো হয়েছিল অন্য বেঞ্চে। আজ সেই মামলার ক্ষেত্রে বড় রায় দিল বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা এবং বিচারপতি এনভি অঞ্জরিয়ার বেঞ্চ।
পথকুকুরদের নির্দেশ নিয়ে বিতর্ক
গত ১১ আগস্ট বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও আর মহাদেবেনের একটি বেঞ্চ কুকুর কামড় এবং জলাতঙ্কে মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি আদেশ জারি করেছিল। যেখানে বলা হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে আট সপ্তাহের মধ্যে কমপক্ষে ৫,০০০ কুকুরের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করতে হবে এবং পথ থেকে সমস্ত কুকুরকে অপসারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেক্ষেত্রে একবার ধরা হলে এই কুকুরদের আর জনপরিসরে ছাড়া যাবে না বলেও জানানো হয়। কিন্তু এই নির্দেশ দেশ জুড়ে অশান্তির আবহ তৈরী হওয়ায় প্রধান বিচারপতি এই মামলাটি বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা এবং এনভি আঞ্জারিয়ার একটি বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে পাঠান। আজ সেই মামলায় দিল্লির পথকুকুরদের জন্য নেওয়া রায় সম্পূর্ণ বদলে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
নয়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
ANI এর রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির পথকুকুরদের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা এবং বিচারপতি এনভি অঞ্জরিয়ার বেঞ্চ পথকুকুরদের বন্ধ্যাত্বকরণে জোর দিয়েছে। অর্থাৎ পথকুকুরদের দিল্লির রাস্তা থেকে নির্দিষ্ট আশ্রয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে সেখানে সঠিক পদ্ধতিতে বন্ধ্যাত্বকরণ এবং প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ করতে হবে। এবং প্রতিষেধকের কাজ শেষ হয়ে গেলেই পুনরায় পথকুকুরদের ফিরিয়ে দিয়ে যেতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রমী রয়েছে। যে সমস্ত কুকুর র্যাবিস আক্রান্ত বা আগ্রাসী স্বভাবের, তাদের আশ্রয়কেন্দ্রেই রেখে দিতে হবে। তাঁদের আর রাস্তায় ফেরানো যাবে না।
আরও পড়ুন: আসানসোলে বিদ্যুৎ বিভাগের বড় অভিযান! চুরি রুখে ৯০ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায়
সুপ্রিম কোর্টের তরফে এদিন পথকুকুরদের জন্য জানানো হয়েছে যে, রাস্তায় প্রকাশ্যে কুকুরদের খাওয়ানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে প্রশাসনকেই পথ কুকুর দের খাওয়ানোর দায়িত্ব নিতে হবে। দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় কুকুরদের খাওয়ানোর স্থান নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। এ নিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য হেল্পলাইন নম্বরও চালু করা হবে। এমনকি কোনও পশুপ্রেমী যদি রাস্তার কোনও কুকুরকে পোষ্য হিসাবে গ্রহণ করতে চান তাহলে তার জন্য দিল্লি পুরসভায় আবেদন জানাতে হবে। পথকুকুরদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের এই রায় কুকুরপ্রেমীদের কাছে অনেক বড় জয় হিসেবে দেখছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।