বড় ধাক্কা রাজ্য সরকারকে! ১৬০০ সুপার নিউমেরারি পোস্ট বাতিল করল হাইকোর্ট

Calcutta High Court

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই পশ্চিমবঙ্গে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচন। তাই জনসাধারণের সামনে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলভাবে ধরে রাখতে শাসকদল একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কিন্তু তার মাঝেই একের পর এক প্রশাসনিক দুর্নীতি উঠে আসছে খবরের শিরোনামে। যার মধ্যে অন্যতম হল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন একের পর বিস্ফোরক তথ্য উদঘাটিত হচ্ছে ঠিক সেই সময় উচ্চ প্রাথমিকে অতিরিক্ত শূন্যপদ মামলায় বড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের (Calcutta High Court) তরফে বাতিল করে দেওয়া হল অতিরিক্ত ১৬০০ শূন্যপদ।

অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা

২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল যার ফলে রাতারাতি চাকরিহারা হয়ে পড়েছিল প্রায় ২৬ হাজার৷ এই নিয়ে একাধিক মামলা দায়েরও হয়৷ ইতিমধ্যে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে নতুন করে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের নিয়োগ প্রক্রিয়াও চলছে৷ পাশাপাশি গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি তে নিয়োগের ক্ষেত্রেও আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে কয়েক হাজারের৷ তাঁদেরও নতুন ভাবে নিয়োগের ক্ষেত্রেও আনা হচ্ছে একাধিক পদক্ষেপ। এমতাবস্থায় ২০১৬ সালের কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার নিয়োগ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন৷ অভিযোগ স্কুল সার্ভিস কমিশন প্রায় ১৬০০ জন কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার প্রার্থীকে নিয়োগ করার জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করেছিল। আর সেই নিয়ে মামলাও দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে৷ এবার সেই মামলায় বড় রায় দিল হাইকোর্ট।

শূন্যপদ নিয়ে বড় ঘোষণা আদালতের

স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বেঞ্চে স্কুল সার্ভিস কমিশন এর অতিরিক্ত শূন্যপদ বা নিউমেরারি পদ সংক্রান্ত মামলা ওঠে। এদিন আবেদনকারী পক্ষের যুক্তি ছিল, পুরনো প্যানেল থেকে কাউকে নিয়োগ করার সুযোগ নেই, আর সেই পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা গেলে তা প্যানেলের মেয়াদ সমাপ্তির আইনকাঠামোর বিপরীত হবে। এবার সেই মতামতকেই গ্রহণ করল হাইকোর্ট। সরাসরি উচ্চ প্রাথমিকের কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত ১৬০০ শূন্যপদ বাতিল করা হল। এক্ষেত্রে আদালতের পর্যবেক্ষণ, প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে নতুন শূন্যপদ তৈরির কোনও বৈধতা নেই। তাই ওই ১৬০০ অতিরিক্ত পদ স্বাভাবিক ভাবেই বেআইনি বলে অভিহিত করা হল।

আরও পড়ুন: ‘নতুন দল বানিয়ে ১৩৫ আসনে লড়ব!’ পাল্টা হুংকার সাসপেন্ডেড হুমায়ুনের

শূন্যপদ তৈরির মামলা প্রসঙ্গে পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানান, যে প্যানেলের মেয়াদ শেষ, তার ভিত্তিতে নতুন শূন্যপদ তৈরি করা যায় না। রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াগত ভাবে ভুল। এছাড়াও আদালত আরও জানায়, কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষার ওই ১৬০০ পদে কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে থাকলেও তা আর এগোবে না। অর্থাৎ, পুরো সিদ্ধান্তই কার্যত বাতিল হয়ে গেল। এমতাবস্থায় বড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। এদিকে হাইকোর্টের রায় বেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

Leave a Comment