“বাংলাই বাংলা চালাবে, দিল্লি নয়!” জলপাইগুড়ির সভা থেকে কেন্দ্রকে তোপ মমতার

Mamata Banerjee

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সকাল থেকেই বেশ তোড়জোর চলছিল। অবশেষে আজ দুপুর ১ টায় উত্তরকন্যা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জলপাইগুড়ি এবিপিসি ময়দানে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন। জলপাইগুড়িতে চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা বিলি-সহ একাধিক কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি সেই সভা থেকেই একাধিক ইস্যুতে বক্তব্য রাখেন প্রশাসনিক প্রধান। এদিন ৪০০ কোটির উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েও নানা বক্তব্য পেশ করেন। আর এসবের মাঝে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করতে ছাড়লেন না তিনি। যার দরুন পুজোর আগে মমতার জলপাইগুড়ি সফর হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক ময়দানে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা পাবেন পরিযায়ীরা!

রিপোর্ট অনুযায়ী, জলপাইগুড়ির সভা থেকে আজ সরকারি সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে রীতিমত তুলোধোনা করে ছেড়েছে। তিনি ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখনও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের নানাভাবে অপদস্ত হতে হচ্ছে। আর সেই সমস্যা থেকে শ্রমিকদের রক্ষা করতে আমরা একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছি। ইতিমধ্যেই ২৪ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারকে ফিরিয়ে এনেছি। তাঁদের জন্য এখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা দেওয়া হবে। আয়ুষ্মান ভারতে ভেদাভেদ করে। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথীতে ভেদাভেদ নেই। সবাই পায়।”

দিল্লিকে হুঙ্কার মমতার!

ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন যে, “বাংলায় কথা বললেই অত্যাচার করা হচ্ছে শ্রমিকদের। তবে আমি বলব বেশি করে মাতৃভাষায় কথা বলুন। সাহস কম না। আমরা মাতৃভাষায় কথা বলব। আর অন্য ভাষাকেও সম্মান করব।” এরপরই কার্যত চিৎকার করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কী অপরাধ বাংলার? বাংলাকে কন্ট্রোল করা যাবে না। বাংলাই বাংলা চালাবে। দিল্লী নয়।” এরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী নেতা কেমন হয় সেই উদাহরণ টানতে গিয়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্ষুদিরাম বোসের নাম নেন। এবং কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে বলে, “ওরা বড়দিনের ছুটি বন্ধ করে দিয়েছিল। বাংলার ভাগের টাকাও আটকে রাখে, আর বলে বাংলা কিছু কাজ করে না! সেক্ষেত্রে যখন টাকা দাও না, তখন আবার প্রশ্ন তোলো কী করে!”

আরও পড়ুন: দিনের পর দিন বেহাল রাস্তা, পূর্ব মেদিনীপুরে বিডিওকে তাড়া মহিলাদের! ভিডিও পোস্ট শুভেন্দুর

প্রসঙ্গত, এদিন সভা জুড়ে নানা বার্তার মাঝেই মানুষের শক্তিকেই বড় করে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির প্রতি কটাক্ষ ছুড়ে তিনি বলেন, “মানুষই বড় পাইলট, তাই নেতা নয়, সিদ্ধান্ত নেবে মানুষই”। তাই সবদিক বিবেচনা করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, আগামী ছাব্বিশের ভোটে বাঙালি ভাবাবেগে শান দিয়ে জিততে চাইছে তৃণমূল সরকার। তাইতো ভাষা আন্দোলন শুরু করেছে শাসকদল। তবে বিজেপি ২৬ এর নির্বাচনে শাসকদলের কোন ইস্যুটাকে মূল টার্গেট করবে সেটাই এখন সেটাই দেখার।

Leave a Comment