বাংলাদেশকে আরেকটি ধাক্কা! স্থলপথে পাট পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ভারতের

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বাংলাদেশকে ফের ধাক্কা ভারতের! এবার স্থল পথে বাংলাদেশ থেকে পাটজাত পণ্য ও হাতে তৈরি কাপড় অর্থাৎ বোনা কাপড় আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল (India Bans Bangladeshi Jute Products) কেন্দ্রীয় সরকার। জানা যাচ্ছে, এবার থেকে আর স্থলবন্দর দিয়ে এই ধরনের পণ্য ভারতে পাঠাতে পারবে না ওপারের রপ্তানিকারকারা। দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে চলা বাণিজ্যিক অচলাবস্থার মাঝে শুক্রবার এমন পদক্ষেপ নিল দিল্লি।

নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ যাতে এই মুহূর্তে স্থলবন্দর দিয়ে আর পাটজাত ও পোশাক পণ্য ভারতে পাঠাতে না পারে, তার জন্য শুক্রবার সরকারি বিবৃতি দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতের ডিরেক্টরের জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড।

বেশ কয়েকটি সূত্র মারফত খবর, দিল্লির তরফে বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞার পর বিভিন্ন পাটজাত পণ্য দ্রব্যের ওপর কড়া নিষেধ আরোপ করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল আলাপ-আলোচনা। শেষমেষ শুক্রবার পূর্ব পরিকল্পনাটিতেই পড়ল সিলমোহর। ভারত থেকে সব রকম উপকার নেওয়া সত্বেও পায়তারা দেখানো বাংলাদেশ ফের পড়ল গাড্ডায়।

কোন কোন পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত?

দেশের একাধিক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিরেক্টরের জেনারেল অফ ফরেন ট্রেডের তরফে নিষেধাজ্ঞার পর এবার থেকে স্থল বন্দর দিয়ে আর ভারতে আমদানি হবে না বাংলাদেশের বোনা কাপড়, পাটজাত পণ্য দ্রব্য বা পাটের অপরিশোধি আঁশ ও পাটের সুতো।

চিন, পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠতার কারণেই কি কঠোর হচ্ছে ভারত?

ওপার বাংলায় শেখ হাসিনার পতন হতেই বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান ক্রমশ কাছাকাছি এসেছে। শুধু তাই নয়, তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ অন্যতম পরাশক্তি চিনের সাথেও ওপার বাংলার সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, অন্যতম দুই বিরোধী পক্ষের সাথে ক্রমশ সখ্যতা বাড়ানো ও ভারতের বিরুদ্ধে নানান অগ্রহণযোগ্য আচরণ তথা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে খুব সম্ভবত ইউনূসের দেশের প্রতি কঠোর হচ্ছে ভারত!

ক্ষতি হবে বাংলাদেশের?

দিল্লির তরফে পোষাক পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করায় এমনিতেই লাটে উঠেছে ওপারের বস্ত্র মালিকদের ব্যবসা! তার ওপর এবার খাড়ার ঘায়ের মতো পাটজাত পণ্যের ওপর স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র। যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যথেষ্ট ধাক্কা দেবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা বিশ্বে পাট ও পাটজাত আঁশ এবং সুতো রপ্তানির অন্যতম নির্ভরযোগ্য জায়গা বাংলাদেশ!

বলে রাখি, পাটজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অনেকাংশেই নির্ভর করতে হতো ভারতীয় আমদানির ওপর। হ্যাঁ, আসলে ওপারের পাটজাত পণ্যের অন্যতম বড় গন্তব্য ভারত। একাধিক প্রতিবেদন বলছে, 2023 আর্থিক বছরে ভারতে অন্তত 93.6 মিলিয়ন ডলারের পাট ও অন্যান্য টেক্সটাইল ফাইবার রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে জুট ইয়ার্ন রপ্তানির পরিমাণ ছিল 61.8 মিলিয়ন ডলার। ফলত, ভারত স্থলপথে আমদানি নিষিদ্ধ করায় যথেষ্ট সমস্যায় পড়বে বাংলাদেশ!

অবশ্যই পড়ুন: ভারত চোখ রাঙাতেই পথে এল বাংলাদেশ! চিন, পাকিস্তানের সাথে জোট নিয়ে এবার উল্টো সুর

উল্লেখ্য, ভারতের ডিরেক্টরের জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড জানাচ্ছে, এই নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে কোনও পাট জাত পণ্য ভারতে আমদানি করা যাবে না। তবে হ্যাঁ, এই নিষেধাজ্ঞা ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে যাওয়া পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বলেই জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এও বলে রাখি, মহারাষ্ট্রের নব সেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে এই ধরনের পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে পারবে।

Leave a Comment