প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে এই মুহুর্তে SIR বিতর্ক যেন এক চরম আকার ধারণ করেছে। যদিও রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন নিয়ে দিনের পর দিন শাসকদল ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তাতে কানই দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। তাঁদের স্পষ্ট বার্তা ভোটার তালিকা থেকে ভুয়ো ভোটার নিশ্চিহ্ন করতে হবে। এমতাবস্থায় শাসক ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে বাকবিতণ্ডার মাঝে ঘটল আরেক বিপদ। বিয়ের পর প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে বাংলাদেশে রেখে বাবা এবং মাকে নিয়ে ভারতে চলে আসলেন হরিচাঁদ মণ্ডল নামে এক ব্যাক্তি। গ্রেফতার করা হল তাঁকে ( Bangladeshi Man Arrested)।
ঘটনাটি কী?
ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিচাঁদ মণ্ডল নামে বছর ৩৫ এর এক ব্যক্তির বাড়ি ছিল বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ঝিটকি গ্রামে। সেখানেই তিনি বিয়ে করেন তহমিনা খাতুন নামে এক মহিলাকে। কিন্তু সাংসারিক অশান্তির জেরে বাংলাদেশে রেখেই বাবা সুজয় কুমার মণ্ডল এবং মা পুষ্পা রানী মণ্ডলকে নিয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন হরিচাঁদ মণ্ডল। সীমান্ত পেরিয়ে তাঁরা গাইঘাটার মোড়লডাঙ্গা গ্রামে পাকাপাকি বসবাস করতে থাকেন। জাল নথি দেখিয়ে এদেশের ভোটার, আধার কার্ড বানিয়ে দিব্যি ছিলেন হরিচাঁদের পরিবার।কিছুদিন পর এখানে এসে হরিচাঁদ দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন পূজা রায়কে। তাঁর বাড়িও বাংলাদেশে, তিনিও পাসপোর্ট নিয়ে এদেশে এসেছিলেন। কিন্তু ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও পূজা অবৈধ ভাবেই এদেশে রয়ে গিয়েছেন।
পুলিস সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের প্রথম স্ত্রীর
পুলিশের অভিযোগ, জাল নথি দেখিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের হয়ে এদেশের পরিচয় পত্র তৈরি করতে হরিচাঁদকে সাহায্য করেছিল স্থানীয় কয়েকজন। ঘটনা তখনও পুলিশের কানে এসে পৌঁছায়নি। আর এই অবস্থায় ঘটে আরও একটি ঘটনা। কিছুদিন আগে হরিচাঁদ মণ্ডলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী তহমিনা খাতুন স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য ভারতে আসেন। আর সেখানে এসেই তিনি সবকিছু জানতে পারেন। হরিচাঁদের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়েও সবটা জানতে পারেন তিনি। এরপর সময় নস্ট না করে বনগাঁ পুলিশ জেলার সুপারকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পুরুলিয়ার দু’জন প্রথম, পাশের হার ৯৩.৭২ শতাংশ! প্রকাশিত হল উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল
গ্রেফতার হরিচাঁদ মণ্ডল
অভিযুক্ত হরিচাঁদ মণ্ডলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী তহমিনা খাতুন পুলিশ সুপারকে বলেন যে, তিনি হরিচাঁদ মণ্ডলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী। তাঁকে বাংলাদেশে রেখে ভারতে এসে দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন হরিচাঁদ। এমনকি তিনি এও অভিযোগ করেন যে, বসবাসের জন্য জাল নথি ব্যবহার করে পরিচয় পত্র বানিয়েছেন হরিচাঁদ। আর সেটা জানাজানি হতেই তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। এরপরই অভিযোগের ভিত্তিতে নড়ে চড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। সঙ্গে সঙ্গে গাইঘাটা থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হলে মোড়লডাঙ্গা গ্রাম থেকে হরিচাঁদ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। এমনকি হরিচাঁদের বাবা সুজয় কুমার মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়।
 
					