প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কয়েক মাস আগে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের রসিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান লাভলি খাতুন বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ায় নিজের পদ হারিয়েছিলেন। তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছিল যে, লাভলি খাতুন বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছেন। এরপর এখানকার এক ব্যক্তিকে বাবা বলে পরিচয় দিয়ে ভারতীয় নথি বানিয়েছেন তিনি। সেই কারণেই লাভলি খাতুনের পঞ্চায়েতের সদস্যপদ খারিজ করে দেন মহকুমাশাসক। এবার সেই একটি চিত্র ফুটে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায়।
বাবা ভাড়া করে থাকছিল বাংলাদেশী যুবক!
টিভি ৯ বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় রকি মণ্ডল নাম এক ব্যক্তি যিনি আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা, সেই তিনি বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন। এবং পরিচয়পত্র গড়ে তোলার জন্য রকি ‘বাবা’ হিসাবে ভারতীয় এক ব্যক্তি আয়েব মণ্ডলের নাম তুলে ধরে। যা নিয়ে শুরু হয় হয় তুমুল ঝামেলা। শেষে বাধ্য হয়ে বাগদার বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি নেতা নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগ দায়ের বিজেপি নেতার
বাগদার বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি উদ্বাস্তু সেলের সভাপতি সন্তু মিস্ত্রী, সেখানকার বিডিও, জেলা শাসক ও নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন যে, রকি মণ্ডল নামের এক বাংলাদেশি যুবক বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করে স্থানীয় আয়েব মণ্ডলকে নিজের বাবা সাজিয়ে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এমনকি পাসপোর্ট পর্যন্ত তৈরি করে ফেলেছে। এমনকি অভিযোগকারী সন্তু মিস্ত্রী এও দাবি করেছেন যে, এই অনৈতিক কাজ করতে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মদত পেয়েছে অভিযুক্ত রকি। তাই তিনি চাইছেন ভোটার তালিকা থেকে রকির ভোট কেটে দিয়ে তার বিরুদ্ধে যেন প্রশাসন সঠিক ব্যবস্থা নিক।
আরও পড়ুন: ডাক ঘরের ১২৭ বছরের পুরনো পরিষেবা বন্ধ! সেপ্টেম্বর থেকে আর মিলবে না রেজিস্ট্রি পোস্ট
অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূল নেতার
অভিযুক্ত ব্যক্তি রকি মণ্ডল যাকে বাবা হিসেবে বানিয়েছিলেন তাঁর পুত্রবধূ আমেনা মণ্ডল এদিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমার শ্বশুর অনেক বছর আগেই মারা গেছেন। বেঁচে থাকতে রকি মাঝে মাঝে আসতেন। দেখা করতেন কিন্তু তিনি যে ওঁকে বাবা সাজিয়ে পরিচয়পত্র বানিয়েছেন তা আমরা কেউই জানতাম না। ও বাংলাদেশ থেকেই এসেছে, এটা জানি।” বিজেপি উদ্বাস্তু সেলের সভাপতি সন্তু মিস্ত্রীর এই দাবি শুনে পাল্টা মন্তব্য করেন তৃণমূল নেতা পরিতোষ সাহা। তিনি বলেন, “কে কোথায় কাকে বাবা সাজিয়ে ভোটার কার্ড বানাচ্ছে তা তো তৃণমূল নেতাদের দেখার কথা নয়। আর কাউকে বাবা সাজিয়ে ভোট করানো প্রয়োজনও পড়ে না। বিজেপি অনেক কিছুই বলে।”