সহেলি মিত্র, কলকাতা: ২০২৬ সালের ভোটের আগে ফের একবার অশান্ত হয়ে উঠল বীরভূম। দীর্ঘদিনের কারখানাকে আচমকা বন্ধ (Rampurhat Rail Factory Closed) করে দেওয়ার ঘোষণায় বিক্ষোভ শুরু হল রামপুরহাটে। জানা গিয়েছে, রামপুরহাটে রেলের পিএসসি স্লিপার তৈরির কারখানায় সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিশ জারি করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। আর এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। আচমকা এহেন বন্ধের নোটিশে স্বাভাবিকভাবেই মাথায় হাত পড়েছে সকলের।
রামপুরহাটে বন্ধ হল কারখানা
সূত্রের খবর, সোমবার সকালে যখন শ্রমিকরা কাকে করতে আসেন তখন গেটে টাঙানো নোটিশ দেখেন এবং হতাশ হয়ে পড়েন কর্মীরা। এরকম সত্যি হলে বউ, বাচ্চা, সংসার নিয়ে প্রায় পথে বসার মতো অবস্থা হবে তাঁদের। আগাম কোনও নোটিশ ছাড়াই কারখানা কীভাবে লকআউট হতে পারে, এই প্রশ্ন তুলে প্রবল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মহীন শ্রমিকরা।
রামপুরহাট স্টেশনের পাশেই ওই পিএসসি স্লিপার তৈরির কারখানাটি রয়েছে। এই কারখানায় প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এদিন সকাল ৬টা নাগাদ কাজে যোগ দিতে এসে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিশ দেখে মাথায় কার্যত বাজ পড়ার অবস্থা হয় শ্রমিকদের। এই অবস্থায় শ্রমিকরা কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেখানে সিটুর নেতারাও হাজির হন। যদিও কর্তৃপক্ষের কারও দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভ শুরু শ্রমিকদের
বিক্ষোভরত শ্রমিকরা বলেন, ‘কারখানার পরিকাঠামোগত অভাব থাকা সত্ত্বেও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে আসছি। সাধারণ স্লিপার সারাবছর তৈরি হয়। বছরে কয়েকবার ক্রসিং স্লিপার তৈরি হয়। কিন্তু ক্রসিং স্লিপার তৈরিতে খাটনি বেশি এবং ঝুকিপূর্ণ কাজ। তাই ক্রসিং স্লিপার তৈরিতে কিছু টাকা দাবি করা হয়েছিল।’ মালিকপক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা হলেও কোনও মীমাংসা হয়নি। এরইমধ্যে রাতের অন্ধকারে কাজ স্থগিতের নোটিশ ঝুলিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এই প্রসঙ্গে সিটুর রাজ্য কমিটির সদস্য অমিতাভ সিং বলেন, ‘যতদিন সাসপেনশন অব ওয়ার্ক থাকবে ততদিন শ্রমিকরা কোনও বেতন পাবেন না।’ প্রশ্ন উঠছে, এখন শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা খাবেন কী? আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে এভাবে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিশ ঝোলাতে পারে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। চরম বেআইনি। এত শ্রমিকের রুজিরুটি নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে না কর্তৃপক্ষ। আমরা আলোচনার মাধ্যমে নোটিশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করব।’ এব্যাপারে কারখানার ম্যানেজার সঞ্জয় খৈতানও মুখে কুলুপ এঁটেছে।