প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন, আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই রাজ্যে শুরু হয়েছে শাসকদল থেকে শুরু করে বিরোধী দলগুলির মধ্যে ভোট প্রচারের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, আর সেই লড়াইয়ে এবার সামিল হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আজ নদীয়ার তাহেরপুরে জনসভা থাকলেও খারাপ আবহাওয়ার জন্য আসতে পারেনি প্রধানমন্ত্রীর চপার। শেষে কলকাতা থেকে অডিও বার্তা দিলেন তিনি।
ভার্চুয়ালি বক্তব্য মোদীর
নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে দমদমের নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাহেরপুরের দিকে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে সভাস্থলের কাছে হেলিকপ্টার নামানো সম্ভব না হওয়ায় মাঝপথ থেকেই কপ্টারটি ফিরে আসে কলকাতা বিমানবন্দরে। বিকল্প হিসেবে সড়কপথে তাহেরপুরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা শুরু হলেও শেষে সড়কপথে তাহেরপুরে আসার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। এবং কলকাতা থেকেই ভার্চুয়ালি তাহেরপুরে নির্ধারিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেখানেই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন তিনি।
জঙ্গলরাজ নিয়ে মমতাকে তোপ মোদীর
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন ভার্চুয়ালি বৈঠকে উন্নয়ন ইস্যুকে সামনে রেখে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান। সেক্ষেত্রে তিনি বিহারে NDA-র জয়ের প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন। মোদি বলেন, গঙ্গা যেমন বিহার থেকে বয়ে বাংলায় পৌঁছয়, তেমনই বিহারের রায় বিজেপির জন্য বাংলাতেও জয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছে। বিহারের মানুষ একস্বরেই ‘জঙ্গলরাজ’কে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ২০ বছর পরও বিজেপি-এনডিএকে আগের চেয়েও বেশি আসনে জিতিয়ে আস্থা জানিয়েছে।” প্রধানমন্ত্রীর আরও দাবি, “পশ্চিমবঙ্গে এখন বিহারের জগঙ্গলরাজের থেকেও ভয়াবহ এক শাসনব্যবস্থা ‘মহাজঙ্গলরাজ’ চলছে। এই মহাজঙ্গলরাজ থেকেই বাংলার মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। তাইতো বাংলার গলি-গলিতে আজ আওয়াজ উঠছে, ‘বাঁচতে চাই বিজেপি তাই’।”
কেন্দ্রের টাকা বঞ্চনা নিয়ে মুখ খুলল মোদি
ডাবল ইঞ্জিন সরকার প্রসঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তিনি দাবি করেন, “রাজ্যের বর্তমান সরকার কাটমানি ও কমিশনের রাজনীতিতে ডুবে রয়েছে। একবার বাংলায় বিজেপিকে সুযোগ দিন। ডাবল ইঞ্জিন সরকার গড়ে দ্রুত উন্নয়ন করা হবে। বঙ্গবাসীর স্বপ্ন পূরণে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করব।” পাশাপাশি এদিন বঙ্গের প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা আটকানোর বিষয়ও তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বাংলার জন্য অনেক কিছু করতে চাই। পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে আমরা পুরো শক্তি দিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত। কিন্তু রাজ্যে এমন একটি সরকার রয়েছে, যারা উন্নয়নের বদলে শুধু কাট-কমিশনের রাজনীতিতে ব্যস্ত। তাই আজও পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়ন সংক্রান্ত হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আটকে রয়েছে।”
আরও পড়ুন: ভেঙেছে বাঁ পা কিন্তু অপারেশন হল ডান পায়ে! তুমুল বিতর্ক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে
প্রসঙ্গত, আজ, শনিবার রানাঘাটে মোদির জনসভার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেই বলেন, “ ভোট এলেই প্রধানমন্ত্রী বাংলায় যাতায়াত শুরু করেন, আদলে এই সফর বিজেপির “ড্যামেজ কন্ট্রোল” ছাড়া কিছুই নয়।” তবে এদিন প্রধানমন্ত্রী জয় নিতাই, থেকে শুরু করে বন্দে মাতরম বলে সভা শেষ করলেও এসএসআইআর নিয়ে মতুয়াদের কোনও বার্তা দিলেন না। আর তাই নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে হৈ হট্টগোল শুরু হয়েছে।