সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: নতুন ভোটার তালিকা (Voter List) সংশোধন নিয়ে এমনিতেই রাজ্য রাজনীতির হাওয়া গরম। বিশেষ করে রামপুরহাট ও নলহাটি পৌরসভা চত্বরে এবার জন্ম শংসাপত্র সংগ্রহ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে হিড়িক লেগেছে। প্রতিদিন পড়ছে লম্বা লাইন। কেউ পাসপোর্ট করাতে গিয়ে আটকাচ্ছেন, কেউ আবার পুরনো কাগজ খুঁজে পাচ্ছেন না, কেউ নিজের নাম সংশোধনের জন্য আসছেন। আর সবার মুখে একটাই প্রশ্ন, ভোটার তালিকায় আদৌ নাম থাকবে তো?
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের এসআইআর নীতি অনুযায়ী, এবার ভোটার তালিকায় নাম থাকার জন্য শুধুমাত্র জন্ম তারিখ নয়, বরং জন্মস্থানের প্রমাণও দেখাতে হবে। আর এতেই মাথায় হাত পড়েছে বহু নাগরিকের। বহু মানুষের জন্ম বাড়িতে বা হাসপাতালে হয়। আর জন্মের সময় কোনো প্রমাণপত্রও রাখা হয় না। আগে মুখে বলেই স্কুলে ভর্তি হওয়া যেত। ফলে সেই পুরনো রেকর্ড জোগাড় করতে এখন ছোটাছুটি করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
লাইন পড়ছে পৌরসভায়
বর্তমানে রামপুরহাট পৌরসভার জন্ম-মৃত্যু বিভাগ চাপের মুখে। ওই দপ্তরের আধিকারিক শুভেন্দু সিংহা বলেছেন, বয়স্কদের ভিড়ই বেশি। কেউ ডিজিটাল সার্টিফিকেট চাইছে, আবার কেউ কেউ পাসপোর্ট বানাতে গিয়ে বুঝছেন যে, জন্ম সার্টিফিকেট দরকার। যাদের পুরনো রেকর্ড রয়েছে, তাদের সঙ্গে সঙ্গে আমরা সার্টিফিকেট দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু যাদের রেকর্ড আমাদের কাছে নেই, তাদেরকে নতুন করে আবেদন করতে হচ্ছে।
অন্যদিকে নলহাটি পৌরসভার দায়িত্ব থাকা বিকাশ মুনি বলেছেন, 2004 সালের পর রেকর্ড থাকলে আমরা নিজেই তা তদন্ত করে দিচ্ছি। তবে তার আগের হলে বিডিও অফিসে যেতে হচ্ছে। তিনি আরো জানিয়েছেন, নার্সিংহোমের জন্মের রেকর্ড থাকলে পৌরসভায় সেই সার্টিফিকেট ইস্যু করে দিচ্ছি আমরা। এতে সাধারণ মানুষের চাপ কমছে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মত আলাদা। তারা বলছেন, আমার জন্ম বাড়িতেই হয়েছিল। আমার মা-বাবা নেই। সার্টিফিকেট আদৌ নেওয়া হয়েছিল কিনা, তাও জানি না। আর আমাদের সময় ওই সমস্ত দেওয়া হত না। তখন এগুলোর দরকারও হত না। আর এখন বলছে সার্টিফিকেট না থাকলে ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ পড়বে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেছেন, আমার জন্মের সময় কেউ সার্টিফিকেট বানায়নি। স্কুলে মুখে বলেই ভর্তি হয়ে গিয়েছিলাম। এখন হঠাৎ করে সার্টিফিকেট চাইছে। অথচ অনেকদিন ধরেই আমার ভোটার লিস্টে নাম রয়েছে। এখন কি করব, বুঝে উঠতে পারছিনা।
আরও পড়ুনঃ ১৭০০ টাকা বাড়ল সোনার দাম, ওদিকে ঊর্ধ্বগতি রুপোর বাজারদর! আজকের রেট
এদিকে রাজ্যে এসআইআর নিয়ে চলছে চাপানোতর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ইলামবাজার সভা থেকে কড়া ভাষায় বলেছিলেন যে, কোনও বৈধ ভোটারকে বাদ দেওয়া চলবে না। আর সেই সুরে সুর মিলিয়ে এবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গা ভাসিয়েছেন। সরকারের তরফ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে, প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ যাবে না। (সোর্স- বর্তমান)