বাংলার ৪৪ কেন্দ্রের ভোটার মায়ারানির! কোড স্ক্যান করতেই মাথায় হাত BLO-র

SIR Controversy

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে SIR নিয়ে একের পর এক তীব্র বিতর্ক (SIR Controversy) শুরু হয়েছে। কখনও কাজের চাপে BLO বা বুথ লেভেল অফিসারের মৃত্যু হচ্ছে তো কখনও আবার ২০০২ এর তালিকায় নিজের এবং পরিবারের নাম দেখতে না পাওয়ায় সুইসাইড করছে একের পর এক ভোটার, সেই কারণে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে জোর দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। কিন্তু এবার ঘটল আরেক ঘটনা। এক ভোটারের নাম দেখা ফেল রাজ্যের ৪৪ জায়গায়। এনুমারেশন ফর্মের কিউআর কোড স্ক্যান করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ বিএলওর।

রাজ্যের ৪৪ বিধানসভার ভোটার মায়া!

রিপোর্ট মোতাবেক, বিধবা মায়ারানি গোস্বামীর বাড়ি আসলে পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার ডিভিসি পাড়ায়। সেখানকার ৪৭ নম্বর বুথের ভোটার হলেন তিনি। কিন্তু তাঁর এনুমারেশন ফর্মে দেওয়া কোড স্ক্যান করতে গিয়ে রাজ্যের ৪৪ জায়গায় ভোটার হিসাবে তাঁর নাম পেয়েছেন বিএলও বা বুথ লেভেল অফিসার। বাঁকুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ দিনাজপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। তবে নাম একই থাকলেও পদবী রাখা হয়েছে একেক জায়গায় একেক রকম। আর তাতেই হই হই রব। যদিও এই ঘটনায় একটুও অবাক নন মায়ারানি দেবী। তিনি বলেন, “আমি তো কিছুই জানি না। শুরু থেকে আমি বৈদ্যনাথপুর স্কুলে ভোট দিই। এসআইআরের ফর্ম পাড়ার সবাই পূরণ করেছে। আমিও করেছি। তার পর জনে জনে আমাকে এসে প্রশ্ন করছেন। তবে অনেকেই বলেছেন, আমার কোনও ভয় নেই।’’

নির্বাচন কমিশনের উপর দায় তৃণমূলের

বিধবা মায়ারানি গোস্বামী পেশায় রাঁধুনি। তিনি বাড়ি বাড়ি রান্নার কাজ করে কোনও ক্রমে দিন চলে ওই মহিলার। থাকেন সরকারি প্রকল্পে পাওয়া বাড়িতে। এদিকে ২০০২ সালের ভোটার তালিকাতেও তাঁর বয়সও কম দেখানোর অভিযোগ উঠে আসছে। কিন্তু তাই বলে কীভাবে ৪৪টি ভুয়ো এপিক কার্ড হল তা নিয়ে অবশ্য রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনায় সরাসরি দায় থেলেছে নির্বাচন কমিশনের উপর। স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি রবীন পাল জানিয়েছেন, “ নির্বাচন কমিশনের যাঁরা নাম তুলছেন, তাঁদের কিছু ভুল হতে পারে। এটা তদন্ত করে দেখুক, সব জায়গায় উনি ফর্ম পূরণ করেছেন কি না।” কিন্তু এই গোটা ঘটনায় বিজেপি দোষ চাপিয়েছে তৃণমূলের উপর।

আরও পড়ুন: চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা তছরুপ সিভিক ভলান্টিয়ারের! অবশেষে গ্রেফতার

পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানিয়েছেন, “ এটা কিছুতেই কোনো ছোট ঘটনা নয়, এতদিন ধরে এইভাবেই এই ভয়ংকর ঘটনা হয়ে আসছে। এসআইআর হচ্ছে বলেই একমাত্র এটা বেরোল। না-হলে তো কোনও দিন জানাই যেত না যে এমন ভোটারও বাংলায় আছেন।’’ যদিও প্রৌঢ়াকে দোষ দিতে তিনি রাজি নন। তাঁর দাবি, মায়ারানির মতো এমন অনেক ‘অসহায় মানুষের’ নাম ব্যবহার করা হয়েছে ভোটের রাজনীতির স্বার্থে। SIR হচ্ছে বলেই সেগুলো প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। সব মিলিয়ে বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই এক তীব্র চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Leave a Comment