বাবার স্বপ্ন পূরণ করলেন মেয়ে, কুস্তিতে বিশ্বজয়ী ১৯ বছরের তপস্যা

Tapasya gahlot world champion she becomes u20 wrestling champion

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বাবার ইচ্ছে ছিল মেয়ে একদিন বড় কুস্তিগীর হবেন। জন্মদাতার স্বপ্নকে শান দিতেই একেবারে আদা জল খেয়ে লেগে পড়েছিল ছোট্ট তপস্যা গহলোত। অবশেষে বুধবার এলো সাফল্য। অনূর্ধ্ব-20-র প্রতিযোগিতায় বুলগেরিয়ার সামাকভে 57 কেজির বিভাগে নরওয়ের ফেলিসিতাস দোমাজেভাকে হারিয়ে বিশ্বসেরা হলেন কুস্তিগীর তপস্যা।

ঠাকুরদার গল্প শুনে শুনে যে স্বপ্ন বুনেছিল বাবা, আজ তা পূরণ করে দেখালেন মেয়ে। তপস্যার কুস্তিতে বিশ্বসেরা হওয়ার খবরে তুমুল উচ্ছ্বসিত তাঁর পরিবার থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন সকলেই।

বাবার স্বপ্ন পূরণ করল মেয়ে

ছেলেবেলা থেকেই প্রপিতামহ চৌধুরী হাজারি লালের গৌরবময় কাহিনী শুনেই বড় হয়েছিলেন তপস্যা। তিনি জানান, তাঁর বাবার ঠাকুরদা হরিয়ানার খানপুর কালান গ্রামে দঙ্গল দাপট দেখিয়েছেন বহুদিন।

রক্তের সাথে কুস্তি জড়িত থাকায়, বাবা পরমেশব গেহলট চেয়েছিলেন একজন বড় মাপের কুস্তিগীর হতে। সেই মতো চেষ্টাও চালিয়েছিলেন তিনি। তবে একটা সময় গিয়ে পরিস্থিতি ও পিছুটানের কাছে হার মানতে হয়েছিল তাঁকে!

তবে নিজে না পারলেও চেয়েছিলেন মেয়ে তপস্যা যেন একজন কুস্তিগীর হয়ে ওঠেন। মেয়েকে কুস্তিগীর করতে চান পরমেশ, এ খবর পাড়া-প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তেই, ভেসে এসেছিল বহু কটাক্ষ।

তবে সেসব সত্ত্বেও মেয়ের প্রতি অগাধ আস্থা রেখেছিলেন বাবা পরমের। তিনি জানতেন, তাঁর মেয়ে একদিন ঠিকই এই পরিশ্রম, স্বপ্ন এবং প্রবল ইচ্ছার দাম দেবে। বুধবার তেমনটাই হয়েছে। বুলগেরিয়ার সামাকভে 57 কেজির বিভাগে ফাইনালে নরওয়ের প্রতিপক্ষকে হারিয়ে বিশ্ব সেরা কুস্তিগির হয়ে উঠেছেন তপস্যা। ভারত পেয়েছে নতুন দঙ্গলকন্যা।

মেয়ের সাফল্যে বাবা পরমেশের বক্তব্য

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তপস্যার বাবা পরমেশ জানিয়ে, আমার ঠাকুরদা চৌধুরী হাজারিলাল কালান গ্রামে কুস্তিগীর হিসেবে খ্যাত ছিলেন। তিনি আমাকে কুস্তির নানান কৌশল শিখিয়েছিলেন। চেয়েছিলাম একজন বড় কুস্তিগীর হতে। তবে চোটের পর পরিস্থিতির প্যাঁচে পড়ে কুস্তি ছাড়তে হয় আমাকে।

তবে সেই থেকে পণ করেছিলাম মেয়েকে কুস্তিগীর করেই ছাড়ব। এর জন্য আত্মীয়-স্বজনের কাছে কম কটাক্ষ শুনতে হয়নি। মেয়েকে উদ্দেশ্য করে নানান অকথা কু কথা শুনিয়েছিলেন তারা। আজ ও বিশ্বসেরা হয়েছে। যারা সমালোচনা করেছিলেন তাদের মুখের উপর জবাব দিয়েছে তপস্যা। মেয়ের এমন সাফল্যে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন বাবা পরমেশ। খুশির অশ্রুও হয়তো বাধ মানেনি তাঁর।

অবশ্যই পড়ুন: বড় সিদ্ধান্ত রাহানের, এই দলের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন ভারতীয় তারকা

উল্লেখ্য, 2016 সাল থেকে স্থানীয় অ্যাকাডেমিতে কুস্তি শিখতে শুরু করেন তপস্যা। তবে এর মাঝে বহু প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে। বাবা পরমেশের বক্তব্য, দেশের হয়ে কিছু করে দেখানোর খিদেটাই ওকে সাফল্য এনে দিয়েছে। বলে রাখি, রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে বহু ট্রফি জিতেছেন তপস্যা গেহলট। গত অনূর্ধ্ব 20 বিভাগে এশিয়ার সেরা হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও ন্যাশনালসে সোনা জিতেছেন তপস্যা। এবার হলেন বিশ্বসেরা। এখন লক্ষ্য সিনিয়র বিভাগে লড়ার।

Leave a Comment