প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৪ নভেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে SIR বা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে অনুযায়ী বাড়ি বাড়ি এনুমারেশন ফর্ম দেওয়া শুরু করে দিয়েছে BLO বা বুথ লেভেল অফিসারেরা। জানা গিয়েছে, আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিটি ভোটারকে জমা দিতে হবে সেই সংশ্লিষ্ট ফর্ম। তার সঙ্গে দিতে হবে প্রয়োজনীয় নথি। যার মধ্যে অন্যতম এবং গুরুত্বপূর্ণ হল জন্ম শংসাপত্র। এবার সেই নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ওরফে ববি।
সার্টিফিকেটের জন্য রেকর্ড ভিড় কলকাতা পুরসভায়
রাজ্যে SIR ঘোষণার পর থেকেই কলকাতা পুরসভার সামনে জন্ম শংসাপত্র নেওয়ার জন্য লম্বা লাইন পড়ছে প্রতিনিয়ত। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, যেখানে SIR ঘোষণার আগে দৈনিক জন্ম শংসাপত্রের জন্য আবেদন জমা পড়ত প্রায় ৩০০টি। সেখানে বর্তমানে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে হাজারেরও বেশি। জন্ম শংসাপত্র তোলার হিড়িক যেন উপচে পড়েছে সাধারণের মধ্যে। গত সাতদিনের বেশি সময় ধরে চলছে এই কাজ। কিন্তু গতকাল অর্থাৎ বুধবার, সেই ভিড় সমস্ত রেকর্ড ভাঙল। জানা গিয়েছে জন্ম শংসাপত্র নেওয়ার জন্য লাইন পুরসভার থেকে বেরিয়ে লাগোয়া রক্সি সিনেমা পর্যন্ত সাপের মতো এঁকেবেঁকে চলে গিয়েছিল। আর তা দেখে মাথায় হাত প্রশাসনিক আধিকারিকদের।
কী বলছেন ফিরহাদ হাকিম?
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘‘ SIR এর কারণে মানুষ আতঙ্কিত। তবে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। অবস্থা সামাল দিতে দৈনিক প্রতিলিপি কপির সংখ্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এমতাবস্থায় আবার ভিন জেলার থানা থেকেও পুলিশ গোছা করে জন্মের শংসাপত্র পাঠাচ্ছে যাচাই করার জন্য। যদিও এগুলি অবশ্য পাসপোর্ট ভিসার জন্য। তবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট জানিয়েছেন, হাতে লেখা বার্থ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না। সবগুলি কম্পিউটারে জলছবি দেওয়া এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের স্বাক্ষর যুক্ত করা থাকবে।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলা নিয়ে নয়া আপডেট
পুর স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, এখন রোজ গড়ে ১৫০টি বার্থ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। আসলে সমস্যা হচ্ছে জন্মের সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য শুধু কলকাতা নয়, ভিন জেলা এমনকী ভিন রাজ্যের মানুষও আসছেন পুরসভায়। কাজের সুবাদে কেউ বেঙ্গালুরু কেউ আবার হায়দরাবাদে অথবা অন্য কোনও রাজ্যে রয়েছেন। তাই SIR এর জন্য ছুটে এসেছেন কলকাতা পুরসভায়। কারণ, হাসপাতালের নথি থাকলেও অনেকের কাছেই পুরসভার জলছবি দেওয়া জন্মের শংসাপত্র নেই, তাই হঠাৎ করেই এত ভিড়। এই অবস্থায় ফিরহাদ জানিয়েছেন, ‘আমি মানুষকে একটাই কথা বলব, চিন্তা করবেন না। মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের পাশে রয়েছে। কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ যাবে না।’