সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ব্যাঙ্ক জালিয়াতিতে (Bank Fraud Case) যুক্ত পলাতক অপরাধীদের বিরুদ্ধে নাকি ব্যাঙ্কগুলির মোট ৫৮,০০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। হ্যাঁ, সোমবার অর্থাৎ ১ ডিসেম্বর সরকার সংসদে এমনই এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। আর সেই তালিকায় উল্লেখযোগ্য দুই নাম বিজয় মালিয়া এবং নীরব মোদী। এছাড়া তাঁরা সহ রয়েছে মোট ৫৩ জনের নাম। সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে আসল টাকা এবং সুদ উভয় অন্তর্ভুক্ত। তবে এবার কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, পলাতক অপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং বিক্রি করার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
সম্প্রতি নিউজ ১৮-র একটি রিপোর্ট অনুযায়ী কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত আর বিক্রির মাধ্যমে এই ব্যাঙ্কগুলি এখনও পর্যন্ত পলাতক অপরাধীদের কাছ থেকে মাত্র ১৯,১৮৭ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে। ফলত এখনও প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া। আর পলাতক ৫৩ জন অপরাধীর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলাও দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে মূল মামলা হল ভারতের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ।
নীরব মোদী, বিজয় মালিয়ার থেকে কত কোটি উদ্ধার হল?
সংসদে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বিজয় মালিয়ার কাছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পাওনা প্রায় ২২,০৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাঙ্কগুলি তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে মোটামুটি ১৪,০০০ কোটি টাকার বেশি আদায় করেছে। অন্যদিকে নীরব মোদীর কাছে পাওনা রয়েছে ৯৬৫৬ কোটি টাকা এবং তাঁর কাছ থেকে ৫৪৫ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আর বাকি টাকার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে আরও বেশ কয়েকজন ব্যক্তি সহ মোট বকেয়ার পরিমাণ ৫৮,০০০ কোটি টাকার বেশি। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই তালিকায় ১৫ জন প্রধান পলাতক অপরাধীর নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের সঙ্গে মীমাংসা নিয়েও আলোচনা চলছে। এদিন জানানো হয়েছে, পলাতক অপরাধীদের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় তাঁদের সম্পদ অধিগ্রহণের চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র সরকার।
আরও পড়ুন: উঠেছিল পাকিস্তানে গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ! বেকসুর খালাস ব্রহ্মস বিজ্ঞানী
এদিকে স্টার্লিং গ্লোবাল রিসোর্সেস প্রাইভেট লিমিটেড এবং স্টার্লিং এসইজেড অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের নীতিন সন্দেশরা এবং চেতন সন্দেশরা ইউনিয়ন ওভারসিজ ব্যাঙ্ক এবং পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের বকেয়া ঋণ নিষ্পত্তি করেছেন বলে খবর সূত্রের। সরকার জানিয়েছে, নিষ্পত্তির পরিমাণ ৪৯৬ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে গত সোমবার থেকে এবং তা চলবে আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখন শুধু দেখার, কেন্দ্র সরকার এই বিপুল পরিমাণ টাকা কীভাবে আদায় করে।