সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে প্রকাশিত হয়েছে এসএসসির অযোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালিকা (SSC Tainted List)। আর এই তালিকায় নাম রয়েছে ১৮০৪ জনের। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে অবশেষে শনিবার সেই তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। আর এই তালিকায় যাদের নাম রয়েছে ও তাঁদের অনেকের পরিচয় জানলে আপনিও হয়তো আকাশ থেকে পড়বেন। ভাবতে বাধ্য হবেন, কেন SSC এতদিন বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তালিকা পেশ করছিল না? এর পেছনে কি সত্যিই কোনও অভিসন্ধি ছিল?
SSC-র অযোগ্য তালিকায় মেগা চমক
জানা গিয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে দাগিদের তালিকা আপলোড করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তালিকা প্রকাশ করল কমিশন। নাম, রোল নম্বর ও সিরিয়াল নম্বর দিয়ে তালিকা প্রকাশ SSC-র। চাইলে আপনিও সেই তালিকা দেখে নিতে পারেন। তবে সবথেকে বেশি অবাক করা বিষয় হল যে তালিকায় রয়েছে শাসক দলের অধিকাংশ হেভিওয়েট রয়েছেন। এই তালিকায় যেমন রয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলরের মেয়ে, ঠিক তেমনই রয়েছে এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতিকাণ্ডে বর্তমানে জেলবন্দি তথা তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠের নাম। আপনিও কি জানতে কৌতূহলী তাঁরা কে সে সম্পর্কে? তাহলে বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
অঙ্কিতা অধিকারী
অঙ্কিতা অধিকারী…এই তালিকা প্রকাশের আগে থেকেই নিয়োগ মামলায় জর্জরিত। তিনি তৃণমূল নেতা পরেশ অধিকারীর মেয়ে। তাঁর নাম রীতিমতো জ্বলজ্বল করছে অযোগ্য তালিকায়।
নমিতা আদক
খানাকুলের আরও এক দাপুটে তৃণমূল নেতা নইমুল হকের স্ত্রী হলেন এই নমিতা আদক। এই তালিকাতেই সিরিয়াল নম্বর অনুসারে ৯১৫-তে নাম রয়েছে। তাঁর রোল নম্বর ৯১৫১২২১১৬৮৬০০১৪৬৭।
বিভাস মালিক
হুগলির খানাকুলের দাপুটে তৃণমূল নেতা হলেন এই বিভাস মালিক। জেলা পরিষদের সদস্য। বিভাসের নাম রয়েছে ৩১৬ নম্বরে। চাকরি যাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি কর্মরত ছিলেন তারকেশ্বরের একটি বিদ্যালয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজে যেমন চাকরি নিয়েছেন, তেমনই পাইয়েওছেন। বিভাসের স্ত্রী সন্তোষি মালিকও ছিলেন ‘দাগি’ শিক্ষিকা। এসএসসি-র তালিকায় বিভাস মালিকের স্ত্রীর নামও রয়েছে।
কবিতা বর্মণ
কবিতা…২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন তিনি। স্বামী প্রফুল্ল বর্মণ উত্তর দিনাজপুরের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ এবং হেমতাবাদের তৃণমূল ব্লক সভাপতি ছিলেন। সেই সময়েই চাকরি। পরবর্তীতে বিজেপিতে যান। তাঁর নামও রয়েছে।
প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল
তিনি তৃণমূল সভানেত্রীর মেয়ে। রোল নম্বর ৩২২১১৬৭৫০০৩৫৭৭। তালিকায় রয়েছেন ১০৬৯ নম্বরে। তিনি হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূল সভানেত্রীর মেয়ে। মায়ের সুবাদেই পৌঁছে গিয়েছিলেন শিক্ষা মহলে বলে অভিযোগ।
অজয় মাঝি
রোল নম্বর ৪২২১১৬৭৫০০৭৫৬৭। তবে ‘দাগি’ শিক্ষক হওয়ার পাশাপাশি তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার অন্তর্গত জলচক অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতিও।
কুহেলি ঘোষ
গ্রাম দিয়ে শহর এই একটা ক্ষেত্রেই হয়তো ঘেরাও করা গিয়েছে। টিভি৯ বাংলার আপাতত কাটাছেঁড়ায় একমাত্র শহুরে মুখ কুহেলি ঘোষ। তিনি জেদী। তালিকায় তার নাম প্রকাশ হতেই দিয়েছেন মামলার হুঁশিয়ারি। আর সেটাই তো স্বাভাবিক। তিনি যে কাউন্সিলর। এসএসসির ‘অযোগ্যের’ তালিকায় ওঠা কুহেলি ঘোষ রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর।
সাহিনা সুলতানা
বর্তমানে হুগলির জেলা পরিষদের সদস্যা সাহিনার নাম এই তালিকায় রয়েছে ১ হাজার ২৪১ নম্বরে। তিন বারের জেলা পরিষদের সদস্যা, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ।