প্রীতি পোদ্দার, আমতা: আর্থিক তছরুপের কারণ দেখিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। যার দরুন বেশ চাপের মুখে পড়েছে রাজ্যের কোষাগার। এদিকে কেন্দ্রের এই টাকা পাঠানোর দায়ে রাজ্যের বহু নিকাশি খাল সংস্কারের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়েছে সকলে। বর্ষার সময় খাল সংস্কার না হওয়ায় বেশ চাপ সহ্য করতে হয় খালগুলিতে। বর্ষায় জল জমে থাকে খালগুলিতে। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ সমস্যায় পরে ঠিক তেমনই কৃষকদেরও একই হাল হয়। তাই এবার এই সমস্যার সমাধানে নতুন মডেল (Howrah Canal Drazing Project) চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার।
‘কোষাগারের ব্যয়বিহীন মডেল’ প্রকল্প সরকারের
রিপোর্ট মোতাবেক হাওড়ার আমতা বিধানসভা কেন্দ্রের শর্টকাট চ্যানেল খনন করার জন্য আর যাতে বেশি টাকা খরচ না হয় এবং ঠিকাদারকে খাল কাটার বরাত এবং মাটি বিক্রির সুযোগ দিয়ে দ্বিগুণ লাভ যাতে করা যায় তার জন্য এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে ‘কোষাগারের ব্যয়বিহীন মডেল’ প্রকল্প চালু করেছে খাল সংস্কারের ক্ষেত্রে। এই প্রকল্প অনুযায়ী খাল খননের জন্য বা সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকার কোনও টাকা খরচা করবে না। বরং যে ঠিকাদারকে খাল খননের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তাঁকেই খাল থেকে তোলা মাটি বিক্রি করার সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
খরচ না করেই লাভবান হবে সরকার
খাল সংস্করণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে যে ঠিকাদার যে পরিমাণ মাটি বা পলি তুলবেন তার দশ শতাংশ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে দিতে হবে। এমনকি ওই ঠিকাদার যে পরিমাণ মাটি বিক্রি করবেন তাঁর ১০ শতাংশ রাজ্য সরকারকে রয়্যালটি হিসেবে দিতে হবে। অর্থাৎ, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কোনও টাকা খরচ না করেই রাজ্য সরকারের কোষাগার দু’ভাবে লাভবান হতে চলেছেন। প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঠিক করা হয়েছে আপাতত এই প্রকল্পের অধীনে আমতা দু’নম্বর ব্লকের থলিয়া থেকে বাকসী পর্যন্ত প্রায় ১১.৬৫ কিলোমিটার শর্টকাট চ্যানেলটি খনন করা হবে। সেখান থেকে ১ কোটি ৭০ লক্ষ পলি তোলা হবে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুকে খণ্ড খণ্ড করে কেটে ফেলার হুমকি!
প্রসঙ্গত, চলতি বছর বর্ষার মরশুমে, আমতা দু’নম্বর ব্লকে ব্যাপক বন্যা হয়েছ। এরপরেই জনতার অভিযোগের ভিত্তিতে আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল এই শর্টকাট চ্যানেল খননের উল্লেখ করেন এবং রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। এরপরই সেই উদ্যোগে মনোযোগ দেন রাজ্য সরকার। আশা করা যাচ্ছে প্রশাসনের এই প্রকল্পে লাভবান হবে থলিয়া, জয়পুর, ঝামটিয়া, খালনা, কাশমলি ও বাকসী এই ছটি গ্রাম। এমনকি পঞ্চায়েতের বহু চাষী এবং সাধারণ মানুষও বেশ উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।