বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর নামেও রয়েছে রেল স্টেশন, তবে বাংলায় নয়! কোথায়? জানুন ইতিহাস

Khudiram Bose Pusa railway station

সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ ক্ষুদিরাম বসু (Khudiram Bose), বাংলার ইতিহাসের এক অনন্য নাম। শহীদ ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন ভারতে ব্রিটিশ রাজের বিরোধিতাকারী সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি মুজাফফরপুর কাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট মাত্র ১৮ বছর বয়সে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। তাঁর সহকর্মী স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রফুল্ল চাকী গ্রেফতারের আগে আত্মহত্যা করেন। যদিও এই নিয়ে দ্বিমত আছে। অনেকেই দাবি করেন যে, ব্রিটিশ পুলিশ প্রফুল্ল চাকীকে হত্যা করেছিল। উল্লেখ্য, তারা দুজনেই একজন ব্রিটিশ বিচারক ডগলাস কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। এক কথায়, সেই সময়ে ইংরেজদের নাকানিচোবানি খাইয়েছিলেন মাত্র ১৮-র যুবক। তবে আপনি কি জানেন, ক্ষুদিরাম বসুর নামে একটি রেলস্টেশন রয়েছে, তাও কিনা বাংলার বাইরে? জেনে নিন বিশদে।

ক্ষুদিরাম বসুর জীবন

শহীদ ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলার মহোবানীতে ত্রৈলোক্যনাথ বসু এবং লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা নেরাজোলের একজন তহসিলদার ছিলেন। ক্ষুদিরাম ছিলেন তাঁর পিতামাতার চতুর্থ সন্তান। ‘খুদ’-এর সাংস্কৃতিক রীতি অনুসারে তাঁর নামকরণ করা হয়েছিল ক্ষুদিরাম। ক্ষুদিরাম যখন ৬ বছর বয়সে তার মাকে হারান এবং যখন তিনি সাত বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। তার বড় বোন অপরূপা রায় তার স্বামী অমৃতলাল রায়ের সাথে তাকে বড় করেছেন। তিনি তমলুকের হ্যামিল্টন হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন।

ক্ষুদিরাম বসুর নামে রেল স্টেশন

তাহলে জানিয়ে রাখি, দেশে একটি রেল স্টেশন রয়েছে যার নাম ‘ক্ষুদিরাম বসু পুসা‘। এই স্টেশনটি ক্ষুদিরাম বসুকেই উৎসর্গ করা। আর এই স্টেশনটি বিহারে অবস্থিত। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। বিহারের সমস্তিপুর জেলার মধ্যে অবস্থিত একটি দুইটি প্ল্যাটফর্মের স্টেশন, এটি পটনা বিমানবন্দর থেকে ৭২ কিমি (৪৫ মাইল) এবং সমস্তিপুর জংশন থেকে ১৩ কিমি (৮.১ মাইল) দূরে। এই স্টেশন পূর্ব মধ্য জোন (ECR) এর অন্তর্গত এবং সোনপুর বিভাগেও রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ১৫ আগস্ট থেকে চালু হচ্ছে FASTag অ্যানুয়াল পাস! কারা যোগ্য, কত টাকা লাগবে জেনে নিন

এর ইতিহাস নিয়ে কথা বললে, স্টেশনের নাম ছিল বৈনি রেলওয়ে স্টেশন। পরে পুসায় ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর এর নাম পুসা রোড বৈনি রাখা হয়। কিছু বছর পরে বৈনি নামটি সরিয়ে ফেলা হয় এবং এর দীর্ঘ সময় ধরে এটি পুসা রোড নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯০-এর দশকের পরে এই স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে ক্ষুদিরাম বোস পুসা রেলওয়ে স্টেশন রাখা হয়। এটি ব্রিটিশদের দ্বারা হত্যা করা সবচেয়ে কম বয়সী ভারতীয় বিপ্লবী স্বাধীনতা সংগ্রামী ক্ষুদিরাম বসুর সম্মানে করা হয়।

ক্ষুদিরাম বসুর মৃত্যু

১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ভোর চারটায় বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুকে পুলিশ মুজাফফরপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া। তখন নাবালক ক্ষুদিরামের চোখে না ছিল ভয় না কান্না। শুধুই ফাঁসিকাঠে ঝোলার আগে ক্ষুদিরামের গলায় একটাই কথা শোনা গিয়েছিল, সেটা হল ‘আমি গীতা পড়িয়াছি, মৃত্যু ভয় নাই।’

Leave a Comment