বিপ্লবী শহীদ কানাইলাল দত্তের বাড়ি ভেঙে ফেলার নোটিশ চন্দননগর পুরসভার! শুরু বিতর্ক

kanailal dutta house in chandannagar

সহেলি মিত্র, কলকাতা : কানাইলাল দত্ত (Kanailal Dutta) স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাসে থাকা এক অনন্য নাম। এমন এক বীর বিপ্লবী যিনি কিনা ইংরেজ শাসকদের নাকানিচোবানী খাইয়েছিলেন, আজ সেই মানুষটির ভিটে বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে। ‘বিপজ্জনক বাড়ি, ভাঙতে হবে,’ পুরসভার তরফে লাগিয়ে দিয়ে যাওয়া হয়েছে সেই নোটিশ। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। তাহলে কি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ভিটেও আর সুরক্ষিত নয় এখন? উঠছে প্রশ্ন। আরও বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।

বীর বিপ্লবী কানাইলাল দত্তের বাড়ি ভাঙার নির্দেশ প্রশাসনের

বীর বিপ্লবী কানাইলাল দত্তের চন্দননগরের বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। এই বাড়িটি ছিল সকলের কাছে স্মৃতিবিজড়িত। কিন্তু আর সেই বাড়ি হয়ত থাকবেই না। কারণ বাড়ি ভাঙার নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেজায় মন খারাপ স্থানীয় মানুষদের। জানা গিয়েছে, চন্দননগরের সর্ষেপাড়ার বুকে থাকা কানাইলালের বাড়ি ভাঙার নোটিশ দিয়েছে পুরসভা।

এই বাড়িটি কানাইলাল দত্তের মামার বাড়ি এখানে তিনি বড় হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বাড়িতে শ্রীহীন দশা চোখে দেখা যায় না। দিনে দিনে হয়ে উঠেছে এটি বিপজ্জনক। যদিও কানাইলাল দত্তের এহেন স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি ভাঙা নিয়ে এখন তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে সর্বত্র। যেহেতু বাড়িটি বেশকিছু অংশ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে সেজন্য ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চন্দননগর পুরসভার তরফে।

বাড়ি ভাঙা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু

স্থানীয়দের অভিযোগ, শহরজুড়ে এমন আরও অনেক বিপজ্জনক বাড়ি থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বিপ্লবীর স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটি ভাঙার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ যা বিপ্লবী কানাইলাল দত্তের স্মৃতিকে অসম্মান করা হচ্ছে৷ তবে চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তীর দাবি, ‘মিথ্যা ও অপপ্রচার করা হচ্ছে। কানাইলাল দত্তের মামার বাড়ি ব্যক্তিগত মালিকাধীন। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে৷ বিপজ্জনক অবস্থায় আছে বলে মালিকের খোঁজ করা হচ্ছে৷ কানাইলাল দত্তের উপর আঘাত হানা আমাদের উদ্দেশ্য নয় ৷’

এই বিষয়ে সরব হয়েছেন চন্দননগরের রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা কল্যাণ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “কানাইলাল দত্তের মামার বাড়ির সামনে চন্দননগর পুরনিগমের দু’টি নোটিশ দেখা গিয়েছে ৷ একটি অগস্ট মাসের ৪ তারিখ, অন্যটি ২২টি। মালিককে ওই বাড়ি দ্রুত ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ না-হলে কর্পোরেশনের তরফে বাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে ৷ দেশকে স্বাধীন করার জন্য কানাইলাল দত্তের আত্মবলিদান অনস্বীকার্য৷ তিনি আমাদের কাছে আবেগ।”

উল্লেখ্য, ১৯০৮ সালের ১০ নভেম্বর আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হয় কানাইলাল দত্তকে। মাত্র ২০ বছর বয়সে দেশের জন্য প্রাণ দিতে তাঁর বুক একফোঁটাও কাঁপেনি। বলা হয় মৃত্যুর সময়ে নাকি তাঁর হাতে ছিল গীতা। তাঁর দেহ নাকি যখন কলকাতায় পৌঁছায় মানুষ তখন সেই দেহ নিয়ে মহামিছিল করেন।

Leave a Comment