সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কেটে গেলেও ভাবাদিঘির জট যেন আর কাটতে চায় না। সম্প্রতি এখানে কাজও শুরু করে দিয়েছিল রেল, তবে ফের একবার স্থানীয়ের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল তাঁদের। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। এমনিতে বেশ কিছু সময় ধরে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেললাইন প্রকল্প (Tarakeswar Bishnupur Rail Project) এই ভাবাদিঘির জন্য বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে প্রায় এক দশক ধরে। এরপর সম্প্রতি একাধিক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পর জমি জরিপের কাজ শুরু হয়। তবে ফের একবার বিশ বাঁও জলে এই প্রকল্প।
ফের থমকে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের কাজ!
জমি জরিপের কাজ শুরু হওয়ার পরেও সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই বাস্তবায়ন হয়নি। যাইহোক, সম্প্রতি নতুন করে এই ভাবাদিঘিতে কাজের জন্য রেল আধিকারিকরা গেলে স্থানীয় মানুষজন পোস্টার হাতে তাঁদের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন। তাঁদের বক্তব্য, বৈঠকের সিদ্ধান্ত রেল বা সরকার কেউই মানেনি। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কাজ বন্ধের কারণ খতিয়ে দেখতে জুডিশিয়াল কমিটি গঠনের দাবি জানান স্থানীয় মানুষজন।
বিক্ষোভের মুখে রেল আধিকারিকরা
এদিকে আকস্মিক পরিদর্শনের খবর না দেওয়ায় স্থানীয় মানুষজনদের ক্ষোভ আরও কয়েক গুন বৃদ্ধি পায়। স্থানীয়দের কথায়, আগে যে সয়েল টেস্টিং হয়ে গেছিল সে বিষয়টিই খতিয়ে দেখতে রেল আধিকারিকরা এসেছিলেন। এরপর আমরা বলি রেলকে আমরা যতটা সম্ভব সবরকম সাহায্য করেছি যাতে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলের কাজ শেষ হয়। কিন্তু বিভিন্ন প্রশাসনিক, ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে সেখানে রাজ্য সরকার বা রেলের তরফে আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তার কিন্তু ১ শতাংশও হয়নি। আমরা আজ তাঁদের সেটাই বললাম এবং রেলের কাছে বলেছি যে জুডিশিয়াল একটা কমিটি হোক। কী কারণে বিকল্প পথ থাকা সত্ত্বেও ফাঁকা মাঠ দিয়ে না গিয়ে শয়ে শয়ে কোটি টাকা খরচ করে দিঘীর ওপর দিয়ে রেল লাইন নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা চলছে।
আরও পড়ুনঃ আর সহজে মিলবে না রেশন কার্ড! SIR নিয়ে জল্পনার মাঝে বড় সিদ্ধান্ত খাদ্য দফতরের
ভাবাদিঘী আন্দোলন কমিটির সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, ‘কোন ১০টা পরিবারকে রক্ষা করতে গিয়ে আজ ১০ লক্ষ মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে সে তথ্যটা সামনে আসার জন্য জুডিশিয়ালি একটা কমিটি ভাবাদিঘির ওপর তৈরি হোক। এরইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ২০১৭ সালে বিকল্প দিঘী করে দেওয়ার কথা বলেছিল সেইজন্য রেল বা রাজ্য সরকার কাজ কতটা এগিয়েছে সেটা বলুক। কার বা কাদের অপদার্থতার জন্য তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প সমাপ্ত হচ্ছে না সেটা রেল বলুক। আগে যখন কাজ হয়েছিল তখন রেল আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছিল। কিন্তু এদিন হুট করে ছলে আসার ফলে গ্রামবাসি বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। আমরা চাইছি রেল লাইনের কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ হোক।’