‘বিশ্বাস কর, আমি চুরি করিনি!’, অসুস্থ কুণালকে ফোন করে কান্না পার্থর, কী কথা হল?

Partha Chatterjee

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এবার দলে সক্রিয় ভূমিকা পালন ও স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়ার জন্য কুণাল ঘোষকে ফোন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)! ঝগড়া দ্বন্দ্ব ভুলে একসময়ের ‘শত্রু’ কুণালকে এবার আপন ভেবেই মনের কথা প্রকাশ করলেন পার্থ! স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তিনি চুরি করেননি। সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় সাড়ে তিন বছর পর দীর্ঘ কারাবাস শেষ করে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু জামিন পেলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এখনও ক্লিনচিট মেলেনি। তাই এখনও তৃণমূল থেকে সাসপেন্ডেড তিনি। তাই জেলমুক্তির পর জনসমক্ষে বিশেষ না-এলেও, এবার আড়ালে নিজের হারানো ভাবমূর্তি উদ্ধারে নেমেছেন পার্থ।

আবেগঘন মুহূর্ত পার্থ-কুণালের

উল্লেখ্য, গত সোমবার বাড়ির স্নানঘরে পা পিছলে পড়ে ডান পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের। পা প্লাস্টার করতে হয়েছে, আপাতত তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর সেই খবর পেয়েই গতকাল অর্থাৎ বুধবারই ফোন করেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানতে চান, কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল। আর সেখানেই তৈরি হল এক আবেগঘন মুহূর্ত। জানা গিয়েছে ফোনের মাধ্যমে দুজনের কথোপকথনের মাঝেই নাকি কান্নায় ভেঙে পড়েন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মুখে একটাই কথা, ‘আমি চুরি করিনি।’

ফোনে কী বললেন পার্থ?

জানা গিয়েছে, চিকিৎসার ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়ার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায় আচমকাই আবেগ তাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন। এবং একটাই কথা বলেন যে, “আমি চুরি করিনি। বিশ্বাস কর, আমি চুরি করিনি।” এদিকে সেই কথা শুনে কুণাল তাঁকে বলেন, “এ সব এখন ভাববেন না। সুস্থ থাকুন। নিজের শরীরের যত্ন নিন।” এ ব্যাপারে পরে কুণাল ঘোষের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “ওনার নতুন ফোন নম্বর আমি জানতাম না। পা ভাঙার খবর পেয়ে খোঁজ নিতে ফোন করেছিলেন। কিছু বিষয়ে কথা হয়েছে। তবে এ নিয়ে বাইরে কিছু বলব না। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয় এটি।” অন্যদিকে সাংবাদিকরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনও উত্তর দেননি।

বদলে যাচ্ছে সম্পর্কের সমীকরণ

একসময় এই কুণাল ঘোষ এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে ব্যাপক মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল। প্রাথমিক দুর্নীতি মামলায় যখন পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলের ঘানি টানছিলেন সেই সময় কুনাল ঘোষ সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, “যখন আমি অন্যায়ভাবে জেলে বন্দি, আমার সম্পর্কে এই পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিবৃতি দিয়েছিলেন। আমার নাকি মাথায় গণ্ডগোল, আমি পাগল। ওর নাম আমার সামনে করবেন না। আমি উত্তর দেব না। যত নাটক।“ যদিও পার্থও কম যাননা। জেলে বন্দি থাকাকালীন একদিন আদালত থেকে ফেরার পথে পার্থ নিজেই বলেছিলেন, “কুণাল ঘোষকে অনেক আগেই তাড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল। ও যা ক্ষতি করছে, বিরোধী দলও করেনি। জেলে এসে জানতে পারলাম, কতটা ঘৃণ্য কাজ করেছে।” আর আজ সেইসব তিক্ততা ভুলে গিয়ে একেবারে ভিন্ন রূপ নিল দুজনের সম্পর্কের সমীকরণ।

আরও পড়ুন: জমি দখল করে বাবরি মসজিদ! হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক কৃষক

প্রসঙ্গত তৃণমূলের দুই মহারথী কুণাল ঘোষ এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই মনোমালিন্য দেখে তীব্র কটাক্ষ কিয়া শুরু করেছে বিরোধী দল বিজেপির একাংশ। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ জানিয়েছেন, “আমি জানতে চাই ৫২ কোটি টাকা তাহলে কে নিয়েছিল? পার্থ চট্টোপাধ্যায় এটা বলতে পারেন যে, আমি একা চোর না। কিন্তু আমি একাই জেল খাটছি, তাহলে লোকে বিশ্বাস করবে।” যদিও এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে কোনও মন্তব্য উঠে আসেনি।

Leave a Comment