প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: শ্রাবণ মাস মহাদেবের ভক্তদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। বিশ্বের সকল শিবভক্তদের কাছে এই মাসের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। অনেকেই এই সময় শিবলিঙ্গে জল ঢালার জন্য দূর দূরান্ত থেকে ভিড় জমায় মন্দিরে মন্দিরে।
এমতাবস্থায় শ্রাবণ মাস উপলক্ষে হিন্দু সনাতনীদের শিবলিঙ্গে জল ঢালার জন্য উত্তরপ্রদেশ থেকে একটি বাস আসছিল। কিন্তু বাবার মন্দিরে যাওয়া নিয়ে শুরু হল এক রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডা। বীরভূমে মাঝরাস্তায় গাড়ি আটকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিপাকে পড়েন পুণ্যার্থীরা।
ঘটনাটি কী?
গতকাল অর্থাৎ ১৬ জুলাই, ফেসবুকে এক বিজেপি কর্মী ভাস্কর মণ্ডল তাঁর প্রোফাইলে একটি পোস্ট করেছিলেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। যেখানে তিনি লিখেছিলেন যে, শ্রাবণ মাস উপলক্ষে উত্তরপ্রদেশ থেকে একটি বাস শিব ভক্তদের নিয়ে জল ঢালার উদ্দেশ্যে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই ডালখোলা চেকপোষ্টে বাসটিকে আটক করা হয় এবং বাসের কাগজপত্র চেক করে তাদেরকে নকল চালান দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় মল্লারপুরে MVI গাড়িটিকে ফের আটক করে বীরভূম পুলিশ এবং ডালখোলা চেকপোষ্টে দেওয়া কাগজটি নকল বলে তীর্থযাত্রীদের হয়রানি করানো হয়।
ফেসবুক পোস্ট বিজেপি কর্মীর
সেই বিজেপি কর্মী ফেসবুক পোস্টে আরও জানিয়েছেন যে, “ পুণ্যার্থীদের বাসটি দীর্ঘক্ষণ মল্লারপুরে আটকে রাখা হয়েছে। যার জেরে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তাঁদের। এইভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার পর হিন্দু সনাতনীদের ভাবাবেগে আঘাত করা হচ্ছে। হিন্দু সনাতনীদের শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়া আটকে দেওয়া হয়, অজুহাত-নকল কাগজ পত্র যা রাজ্য সরকারের সংস্থা স্বয়ং দিয়েছে! এইভাবে আর কতদিন হিন্দুদের লাঞ্ছনার শিকার হতে হবে বাংলায় ? ভাবতে হবে প্রত্যেক হিন্দু সনাতনীদের।” যদিও পরে বিজেপির আন্দোলনের ফলে বাস ছাড়তে বাধ্য করে বীরভূম পুলিশ।
অবশেষে বাস ছাড়ে পুলিশ
বিজেপি কর্মী ভাস্কর মণ্ডল তাঁর প্রোফাইলে পরবর্তী এক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে, “বিজেপির আন্দোলনের ফলে শিবভক্ত ধর্মপ্রাণ উত্তরপ্রদেশের সনাতনীদের বাস ছাড়তে বাধ্য হল বীরভূম পুলিশ। তবে সুত্র অনুযায়ী জানতে পারছি ১ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা MVI ফাইন করছে, যদি ফাইন করে থাকেন তীর্থযাত্রীদের এই বাসকে, তাহলে রাজপথে দেখা হবে।” নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনায় ফের অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল।
আরও পড়ুন: ২ মাস পর স্ত্রী-ছেলেকে দেখে আবেগে ভাসলেন শুভাংশু শুক্লা! ভাইরাল ছবি
এমতাবস্থায় গতকাল অর্থাৎ ১৬ জুলাই, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের উপর অত্যাচারকে ঘিরে প্রতিবাদ মিছিল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বাঙালি নিপীড়নের প্রতিবাদে এই মিছিল থেকে সর্ব ধর্ম সমন্বয়েরও বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু গতকালের এই ঘটনায় রাজনৈতিক শিবিরে এক বড় প্রভাব পড়তে চলেছে।