প্রীতি পোদ্দার, সিউড়ি: এবার গণধর্ষণের ঘটনা ঘটল বীরভূমের (Birbhum) সিউড়িতে! কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে জঙ্গলে এক আদিবাসী প্রৌঢ়াকে গণধর্ষণের অভিযোগ। নির্যাতিতার চিৎকারে দৌঁড়ে আসে স্থানীয়রা। এরপরই অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এদিকে সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে শুরু হয় অভিযোগের কাঁদা ছোড়াছুড়ি। পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাটের অভিযোগ তোলে বিজেপি।
ঠিক কী ঘটেছিল?
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ সকালে প্রার্থনা শেষে বাড়ি ফেরার পথে এক আদিবাসী প্রৌঢ়াকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল বীরভূমের সিউড়তে। ঝোপের মধ্যে থেকে গুরুতর আহত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হল এক আদিবাসী প্রৌঢ়াকে। এরপর পরিবারের সদস্যরা অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করায়। প্রৌঢ়ার ধর্ষণের খবর পেয়েই হাসপাতালে আসেন আদিবাসী গাঁওতার নেতা রবীন সোরেন এবং বিজেপির বীরভূম সংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি বাবন দাস, এছাড়াও হাসপাতালে আসেন ডিএসপি কুনাল মুখোপাধ্যায়ও। এদিকে শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে গেরুয়া শিবির।
তুমুল উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি এলাকায়
এদিন বীরভূমের সিউড়িতে আদিবাসী প্রৌঢ়ার গণধর্ষণের এই ঘটনায় বিক্ষোভ শুরু করেছে স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের দাবি, ওই আদিবাসী যুবতী ধর্ষণের শিকার, আর সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতেই কোনও পরীক্ষা ছাড়াই দ্রুত তাঁকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। সিউড়ি এক নম্বর মণ্ডল সভাপতি অভিজিৎ দাসের অভিযোগ চিকিৎসা করার সুযোগই দেয়নি পুলিশ। তার আগেই এক জুনিয়র ডাক্তার তাঁর রেফার লিখেই ছেড়ে দেন। তুমুল উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। যদিও আদিবাসী গাঁওতার নেতা রবীন সোরেনের দাবি, ঘটনা যাই হোক, আগে মহিলাকে সুস্থ হতে হবে। তাই এইমুহুর্তে এই ঘটনায় রাজনীতি না ঢোকাই শ্রেয়।
কী বলছে নির্যাতিতার পরিবার?
আদিবাসী নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা সকলেই যে যাঁর কাজে ব্যস্ত ছিল, এরপর জঙ্গলের ভিতর থেকে চিৎকার শোনা যায়। এরপরই প্রৌঢ়ার খোঁজ শুরু করা হয়। বহু খোঁজাখুঁজির পর জঙ্গলের ভিতর বাড়ি থেকে আধ কিলোমিটার দূরে নির্যাতিতাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সেই অবস্থাতেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নির্যাতিতাকে পুলিশ নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেয় গেরুয়া শিবির, তাই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়। সেই কারণে ওই এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: কেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপর হামলা! কে এই অভিষেক দাস? মুখ খুলল ধৃতের পরিবার
শেষ আপডেট অনুযায়ী জানা গিয়েছে বীরভূমের সিউড়িতে ঘটে যাওয়া এই গণধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া মাত্রই শুরু হয়ে জোরদার তদন্ত। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় নমুনা সংগ্রহের কাজও করেছে পুলিশ। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখতে চলছে কোণায় কোণায় তল্লাশি। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হবে বলেই দাবি তদন্তকারীদের। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এই ঘটনা অত্যন্ত ন্য়ক্কারজনক। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিশ্চয়ই নেবে।