প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছরের পর বছর ধরে হুগলি নদীর উপর কলকাতা এবং হাওড়াকে জুড়ে রেখেছে এই অতি প্রাচীন ইস্পাতের সেতু। নিত্যদিন এই সেতুর ওপর দিয়ে লক্ষ লক্ষ গাড়ি যাতায়াত করে থাকে। এককথায় বলা যায় বহু ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে চলেছে এই হাওড়া ব্রিজ। কিন্তু এবার এই ব্রিজকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে এক ভয়ংকর আতঙ্ক। শোনা যাচ্ছে ধীরে ধীরে এই ব্রিজ নাকি ভেঙে পড়ার মুখে পড়তে চলেছে। আর তাই নিয়ে ভয় বাড়ছে সাধারণ মানুষের মনে।
হাওড়া ব্রিজের স্বাস্থ্য নিয়ে আতঙ্কিত রাজ্য
মূলত এই জনপ্রিয় এবং প্রাচীন ব্রিজটি সম্পূর্ণ লোহার কাঠামো এবং স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে আছে। ফলে বছরের পর বছর সেই ব্রিজগুলি কেমন অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার উদ্দেশ্যেই সম্প্রতি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এই ব্রিজের। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে হাওড়া ব্রিজে বা রবীন্দ্র সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি।
এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা RITES ৮০ দশকের মাঝামাঝি হাওড়া ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিল। এরপর ২০১৮ সালে মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরই হাওড়া ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা ভাবা হয়েছিল, কিন্তু করা হয়নি।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা ব্রিজের
তবে সম্প্রতি সেই হাওড়া ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রকাশ্যে এসেছে সেই রিপোর্ট। যেখানে জানানো হয়েছে যে ব্রিজের ডেক সারফেসে বেশ কিছু কাজ করতে বলা হয়েছে। এবং জয়েন্টেও বেশ কিছু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে বলা হয়েছে। আর এই কাজ চলার সম্ভাবনা আগামী দেড় বছর ধরে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে ২০১০ সালে বন্দরের তরফে জানানো হয়েছিল, গুটকা এবং পানের পিক সেতুর হ্যাঙ্গারকে ক্ষয় করছে। তখন ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য হ্যাঙ্গারগুলি ফাইবারগ্লাসে ঢাকা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সৌন্দর্যায়ন থেকে আধুনিকতার দায়িত্ব, আদানি গ্রুপের হাতে গেল কুমোরটুলি ঘাট
লাইটিং শো হাওড়া ব্রিজে
এছাড়াও হাওড়া ব্রিজের আভিজাত্য বজায় রাখতে হাওড়া ব্রিজ তথা রবীন্দ্র সেতুতে এ বার থেকে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো’–এর সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে চলেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষ, দুর্গাপুজো-সহ বছরে অন্তত ৫০ দিন হাওড়া ব্রিজে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো হবে।
বিষয়বস্তু হিসেবে থাকবে রবীন্দ্র সেতুর ইতিহাস, স্বাধীনতা দিবস, দুর্গাপুজো, বাংলা নববর্ষ, জাতীয় দিবস। দর্শকরা যাতে এই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে তার জন্য একটি নতুন ‘মোবাইল অ্যাপ’-ও চালু করতে চলেছে।