বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আকাশের মুখ ভার। সারাদিনে একফোঁটাও বিরাম নেই বৃষ্টির। কখনও মুষলধারায়, কখনও আবার গতি কমিয়ে চলছে বর্ষণ। গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে চেয়েছিল বঙ্গবাসী, তবে সেই আবেদন রাখতে গিয়ে একেবারে ঢেলে বৃষ্টি দিয়েছেন ইন্দ্রদেব। কাজেই, প্রতিদিনের বৃষ্টিতে প্যাচপ্যাচে কাদা ও জল যন্ত্রণা নিয়েই দিন গুজরান করছেন রাজ্যবাসী!
তবে বৃষ্টির দাপটের সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খুদে দস্যু মশার উপদ্রব। সেই সাথেই পারদ ছাড়িয়েছে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই রাজ্য বলা ভাল দেশজুড়ে বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গুতে। তাই আর যাই হোক মশা থেকে বাঁচো নীতি নিয়েই চলতে হচ্ছে আম জনতাকে।
এমতাবস্তায়, ঘটল বিরাট বিস্ফোরণ! হ্যাঁ, এবার নাকি মশা তাড়াবে AI! বিশ্বাস না হলেও মশার উপদ্রব কমাতে প্রতি মুহূর্তে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। ইতিমধ্যেই নাকি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মশার মোকাবিলা করা গিয়েছে! উদ্যোগটা যদিও সরকারের।
মশা মারবে AI?
বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মশার মোকাবিলা করতে এবার নাকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। ভিন রাজ্যে এবার চালু হয়েছে স্মার্ট মশা নজরদারি ব্যবস্থা। জানা যাচ্ছে, সরকারের তরফে SMoSS অর্থাৎ উচ্চ প্রযুক্তির এক AI চালিত সিস্টেম ব্যবহার করে মশার কার্যকলাপ ট্র্যাক করছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। কিন্তু কীভাবে?
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, SMoSS আসলে একটি উচ্চ প্রযুক্তির AI সিস্টেম। যেখানে মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত সেন্সর থাকে। এছাড়াও রয়েছে ড্রোন ও lOT ডিভাইস। মূলত এই গোটা সিস্টেমকে ব্যবহার করে মশার প্রজাতি, মশাটি পুরুষ না মহিলা অর্থাৎ লিঙ্গ, কোন এলাকায় কত মশা রয়েছে, এমনকি সেই অঞ্চলের আর্দ্রতা কত সবটাই জানা সম্ভব।
বলা বাহুল্য, এই বিশেষ সিস্টেমটি যখনই কোনও অঞ্চলে মশার গতিবিধি লক্ষ্য করে তৎক্ষণাৎ এটি সতর্কবার্তা দেয়। সিস্টেমের কাছ থেকে সতর্কবার্তা পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পৌর কর্পোরেশনের দল ওই অঞ্চলটিতে পৌঁছে ফগিং বা স্প্রের মাধ্যমে মশাগুলিকে নির্মূল করে।
কীভাবে কাজ করে এই গোটা সিস্টেম?
প্রথমেই বলে রাখি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স চালিত সেন্সর ও ড্রোন বিভিন্ন অঞ্চলে মশার সংখ্যা এবং কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য দেয়। শুধু তাই নয়, এই তথ্যগুলি ড্যাশবোর্ডে লাইভ ট্র্যাক করা যায়। যা থেকে পৌর প্রশাসনের কর্মীরা দ্রুত সতর্ক হয়ে যেতে পারেন। বলে রাখি, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনও রকম অপ্রয়োজনীয় রাসায়নিক স্প্রে করা হয় না, যাতে পরিবেশ ও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
অবশ্যই পড়ুন: জুলাইতেই ২৫,০০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে SBI
প্রসঙ্গত, আপাতত যা খবর, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম, বিজয়ওয়াড়া, কাকিনাড়া, নেলোর, রাজমহেন্দ্রভরম সহ 6টি পৌর কর্পোরেশনের 66টি এলাকায় ইতিমধ্যেই একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে মশা মোকাবিলার স্মার্ট সিস্টেম চালু করা হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পটি সফল হলে আগামী দিনে অন্ধ্রপ্রদেশের বাকি অংশ সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে।