বেটিং অ্যাপ মামলায় বড় ধাক্কা! অঙ্কুশ-মিমির কয়েক লাখ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ED

Betting App Case

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বেটিং অ্যাপ কাণ্ডে (Betting App Case) নয়া মোড়। বেআইনিভাবে অর্থপাচার মামলায় এবার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED। বলিউডের অভিনেতা অভিনেত্রী পাশাপাশি এই মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী এবং টলিউড অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরার থেকে লাখ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ED। জানা গিয়েছে সমস্ত অভিনেতা অভিনেত্রী ও ক্রিকেটের তারকাদের মিলিয়ে নাকি প্রায় ৮ কোটি টাকার বেশি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।

কোন তারকার থেকে কত টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত?

ED-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীর কাছ থেকে ৫৯ লাখের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে অঙ্কুশ হাজরার থেকেও ৪৭.২০ লাখ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শুধু এই দুজন নয়, বেটিং অ্যাপ মামলায় বলিউডের একাধিকের তরফে লাখ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সোনু সুদের থেকে ১ কোটি টাকার সম্পত্তি, নেহা শর্মার থেকে ১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকার সম্পত্তি, মীরা রাউতেলা যিনি সম্পর্কে ঊর্বশী রাওতেলার মা, তাঁর কাছ থেকে ২ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার যুবরাজ সিংহের কাছে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি এবং রবীন উথাপ্পার থেকে ৮ লক্ষ ২৬ হাজার টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

জড়িয়ে অঙ্কুশ-মিমির নামও!

উল্লেখ্য, এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিদেশে নথিভুক্ত একটি বেটিং প্ল্যাটফর্ম, ১এক্সবেট। যা নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরে চর্চা চলছে। ‘রক্তবীজ ২’ ছবির মুক্তির আগে, সেই ছবির প্রচার চলাকালীন মিমি চক্রবর্তী এবং অঙ্কুশ হাজরাকে তলব করা হয়েছিল। প্রচারের মধ্যেও মিমি ও অঙ্কুশ ২ জনেই দিল্লি গিয়ে হাজিরা দিয়েছিলেন ইডির দফতরে। সেখানে তাঁদের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেই সময়ে এই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেছিলেন, সিনেমার প্রচারে সাহায্যই নাকি করে দিয়েছে ইডি। যদিও সেই সময় অঙ্কুশ বলেছিল ওই অ্যাপের সঙ্গে যাঁরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককেই তলব করা হয়েছে। আর এবার সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে ED কোটি কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করল।

এছাড়াও, ED-র তরফ থেকে বেটিং অ্যাপ মামলা কাণ্ডে আরও একটি বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, তা হল, বেটিং অ্যাপের গোটা বিষয়টা সম্পর্কে জেনেই এই বেটিং অ্যাপের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন বলিউড টলিউডের সমস্ত তারকারাই। শুধু তাই নয়, অভিনেতা অভিনেত্রী ও ক্রিকেটারদের অ্যাকাউন্টে যে টাকা আসত, সেখানে উল্লেখ থাকত না সেই টাকার সঠিক উৎস। আর এই সবটা সম্পর্কে অবগত ছিলেন অভিনেতা অভিনেত্রী ও ক্রিকেটাররা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-এর আওতায় একটি ‘প্রভিশনাল অ্যাটাচমেন্ট অর্ডার’ জারি করে ইডি এই পদক্ষেপ করেছে। এবং বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তিগুলি ‘অপরাধলব্ধ আয়’-এর অংশ হিসেবে মার্ক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: লাইনচ্যুত রাজধানী এক্সপ্রেসের ৫টি কামরা, মৃত্যু ৮ হাতির! ব্যাহত রেল পরিষেবা

প্রসঙ্গত, বেটিং অ্যাপ মামলায় এর আগে ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ান ও সুরেশ রায়নাকেও তলব করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁদের কাছ থেকে প্রায় ১১.১৪ কোটি টাকার সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করেছিল সংস্থা। এমতাবস্থায় আরও একবার ইডির এই পদক্ষেপের পর মিমি চক্রবর্তী ও অঙ্কুশ হাজরাকে ঘিরে রাজনৈতিক ও বিনোদন মহলে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে তদন্ত এখনও চলছে। তবে শেষ আপডেট অনুযায়ী, বেটিং অ্যাপ মামলায় ৮ কোটি কাটার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ইডির তরফে।

Leave a Comment