প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মৃত্যু এক যুবকের। বছর ৩৫ এর মৃত যুবকের নাম অরিজিৎ দাস। গত বৃহস্পতিবার ধুম জ্বর নিয়ে ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যালে ভর্তি করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। তবে এই ডেঙ্গু মৃত্যুর ঘটনায় এসএসকেএম এবং শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন মৃতের পরিবার।
SSKM এর বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ পরিবারের
ডেঙ্গি আক্রান্তে মৃত বছর ৩৫-এর অরিজিৎ দাস গাবতলা লেনের বাসিন্দা ছিলেন। গত শনিবার থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। এরপর ব্লাড টেস্ট করালে ডেঙ্গু রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শেষে ১৪ আগস্ট, বৃহস্পতিবার ধুম জ্বর হওয়ায় তাঁকে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য ছুটে বেড়ায়। কিন্তু বেড খালি না পাওয়ায় একাধিক হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে ঘোরে পরিবার। শেষে ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যালে মৃত্যু হয়েছে অরিজিৎ দাসের। অরিজিতের বাবা SSKM এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, এসএসকেএমে বেড নেই বলে পরে আবার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার পর অক্সিজেন দিয়ে তিন ঘণ্টা টানা রেখে দিয়েছিল। এরপরই একজন এসে ৫০,০০০ টাকা দাবি করেন। যা শুনে মাথায় হাত পড়ে পরিবারের।
দালাল চক্র হাসপাতালে
বহুবার এর আগে হাসপাতালে দালালচক্র নিয়ে সতর্ক করা হলেও SSKM এ এই ঘটনা বারংবার শিরোনামে উঠে আসে। এরপর ছেলেকে নিয়ে বাবা শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের রোগী সঙ্কটজনক নয় বলে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর কোনও ক্রমে অরিজিৎ দাসের পরিবার বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি করেন ছেলেকে। মঙ্গলবার অবস্থা ভাল হয়। কিন্তু হাসপাতালে তরফে জানানো হয় অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য। তাই পরেরদিন, বুধবার বেহালার বালানন্দ ব্রহ্মচারী হাসাপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই একই কথা বলা হয়।
এরপর বৃহস্পতিবার কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে আসার পর, ভর্তির প্রক্রিয়া চলাকালীনই মৃত্যু হয় অরিজিতের। জ্বরের সঙ্গে উপসর্গ হিসাবে খিঁচুনিও ছিল। কিন্তু ব্যর্থ হয় সমস্ত চিকিৎসা। ডেথ সার্টিফিকেটেও ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে। পরিবারের অভিযোগ এসএসকেএম ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগী ফেলে রেখে দিয়েছিল এবং ভর্তিও নেয়নি, যার ফলে সঠিক চিকিৎসা পায়নি অরিজিৎ। আর তাতেই বেশ ক্ষুব্ধ পরিবার।
আরও পড়ুন: ছড়াচ্ছে ভয়ঙ্কর রোগ! জলপাইগুড়িতে বন্ধ দিনে ১ লক্ষ ডিম উৎপাদন করা পোল্ট্রি ফার্ম
ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তে মৃত্যু বৃদ্ধের
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বছর ৭৫ এর স্বরূপ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি কলকাতা পুরসভার ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের সানি পার্কে। বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন, ডেঙ্গুর উপসর্গ থাকায় পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপরেই স্বরূপ মুখোপাধ্যায়কে শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সেই সময় তাঁর প্লেটলেট ছিল ৩৫ হাজার। শেষে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধের।