বেতন-বোনাস বকেয়া রেখেই পালালেন মালিক! ডুয়ার্সে বন্ধ চা বাগান, কর্মহীন ১,০৭৬ শ্রমিক

Banarhat

প্রীতি পোদ্দার, বানারহাট: বছর শেষ হতে আরও মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। এর মাঝেই ফের রাতারাতি বাংলায় কাজ হারালেন অসংখ্য শ্রমিক, ডুয়ার্সের বানারহাট এলাকার (Banarhat) মঙ্গলকাটায় বন্ধ হয়ে গেল আরও একটি চা বাগান। রাতের অন্ধকারে সকলের অলক্ষ্যে বাগান কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান। কাজ হারিয়ে মাথায় হাত শ্রমিকদের। কীভাবে সংসার চলবে? তাই নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক সংগঠনের মধ্যেও চর্চা শুরু হয়েছে।

ফের বন্ধ চা বাগান

স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শুক্রবার গভীর রাতে বানারহাটের মোগলকাটা চা বাগান ছেড়ে চুপিসারে পালিয়ে যায় এই বাগানের মালিকপক্ষ। পরেরদিন অর্থাৎ শনিবার সকালে প্রতিদিনের মতো কাজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন শ্রমিকরা। কিন্তু তখনই দেখা যায় বাগানে কোনও কর্তৃপক্ষ উপস্থিত নেই এমনকি বাগানের ভিতরেও নেই কোনও গাড়ি। তাতেই সন্দেহ বাড়ে এবং পরে জানা যায় চা বাগান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতেই দ্রুত খবর ছড়িয়ে পড়ে। এবং শত শত চা শ্রমিক ভিড় জমান বাগানের কারখানার গেটের সামনে। শুরু হয় বিক্ষোভ।

বড় অভিযোগ চা শ্রমিকদের

চা শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরেই বেতন ও মজুরি বকেয়া রেখে দিয়েছিলেন। কারখানার অবস্থা খারাপ বলে সেই বকেয়া পরে শোধ করা হবে বলে এখনও করা হয়নি, এমনকি পুজোর বোনাসও এখনও দেওয়া হয়নি। একাধিকবার বকেয়া মজুরি ও প্রাপ্য টাকার দাবিতে মালিকপক্ষের কাছে জানানো হলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। আর সেক্ষেত্রে রাতারাতি এই চা বাগান বন্ধে বড় বিপর্যয় নেমে এল শ্রমিক শিবিরে। এক ধাক্কায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় ১,০৭৬ জন চা শ্রমিক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন প্রাক্তন নাগরাকাটা বিধায়ক সুখমইত ওঁরাও এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জন বার্লা। তাঁরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।

আরও পড়ুন: হঠাৎ বন্ধ হল NJP-আলিপুরদুয়ার ভিস্টাডোম স্পেশাল, ফের চলবে কবে? জানাল রেল

রাতারাতি এইভাবে চা বাগান বন্ধের কারণে শ্রমিকদের আন্দোলন জারি রাখা হয়েছে। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে মালিক কর্তৃপক্ষকে ধরে এনে বাগান চালুর ব্যবস্থা করুক। সমস্ত বকেয়া মজুরি ও বোনাস অবিলম্বে পরিশোধ করুক। নাহলে আরও বড় আন্দোলন করবেন তাঁরা। এখন প্রশ্ন কীভাবে এবার শ্রমিকদের সংসার চলবে? কীভাবেই বকেয়া টাকা মিলবে এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন? তাই বেশ আতঙ্কের পরিবেশে তৈরি হয়েছে শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।

Leave a Comment