প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বর্ষ শেষের আনন্দে সকলে যখন খুশির আনন্দ উল্লাসে ব্যস্ত সেই সময় ফের ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল বিরাটিতে (Birati)। জানা গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ সোমবার গভীর রাত দেড়টা নাগাদ যদুবাবু বাজারে আগুন লেগে যায়। এবং মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন ছড়িয়ে যায়। এক রাতের মধ্যে চোখের সামনে জীবনের সবকিছু ছাই হয়ে যেতে দেখলেন শতাধিক ব্যবসায়ী। পুড়ে ছাই হয়ে গেল ২০০-টিরও বেশি দোকান। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের ৭টি ইঞ্জিন। তবে রাতে যেহেতু বেশ হাওয়া চলছিল, তাই আগুন নেভাতে দমকলকর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।
বাজারে ২০০টি দোকান পুড়ে খাক
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাজারের প্রতিটি দোকানই টিনের ছাউনি দেওয়া ছিল কিন্তু কোনও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না। ফলস্বরূপ, রাতে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে তীব্র বেগে। মুহূর্তেই গোটা বাজার ছারখার হয়ে যায়। যদিও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন দমকল বাহিনী সময় মতো এসেছে। কিন্তু দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও রাস্তা সরু হওয়ার কারণে বাজারের ভিতরে যেতে পারেনি। তাই পাশের উড়ালপুলে দমকলের গাড়িগুলি দাঁড় করিয়ে আগুন নেভানোর কাজ হচ্ছিল। মঙ্গলবার সকালেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। মোট সাতটি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ করছে। দমকল জানিয়েছে, আগুন নেভানো গেলেও এখনও সাদা ধোঁয়া রয়েছে। বাজারে পকেট ফায়ারগুলি কাজ করছে।
আরও পড়ুনঃ ট্রেনের রিজার্ভেশনের সময় ও নিয়মে ফের পরিবর্তন করল IRCTC, জানুন নতুন টাইমিং
ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে লাখ লাখ টাকার
ভয়ংকর এই ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পরে অসংখ্য ব্যবসায়ী। যদুবাজারের ২০০টি দোকান পুড়ে খাক, ব্যবসায়ীরাও বছর শেষে কার্যত সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। চোখের সামনে নিজের দোকান জ্বলতে দেখে একজন কাতর স্বরে বলে ওঠেন, ‘এ তো শ্মশান!’। এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে যেকোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কারণ, বাজারের কাছেই একাধিক ফ্যাট, বাড়ি- ঘন জনবসতি আছে, সেখানে আগুন ছড়িয়ে গেলে প্রাণহানির আশঙ্কাও ছিল। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে লাখ লাখ টাকার। অনেকের দোকানে সামগ্রী ছাড়াও নগদ টাকা রাখা ছিল, সেগুলিও এখন পোড়া কাগজ ছাড়া আর কিছু না। এই ক্ষতি পূরণ করতে অনেক সময় লাগবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: বাংলায় এলেও করছেন না কোনও জনসভা, দেখুন অমিত শাহের কর্মসূচি
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল রাতেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উত্তর দমদম পুরসভার প্রধান বিধান বিশ্বাস। বেশ কয়েকজন পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি। ব্যবসায়ীদের অকাল পরিণতি দেখে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেতা। তাঁর কথায়, ‘আমরা ওদের পাশে রয়েছি। এই বাজার পুরসভার অন্তর্গত, আমরা অবশ্যই ওদের দেখব। চেষ্টা করব পুনর্বাসন দেওয়ার।’ শুধু তাই নয় তিনি গোটা দুর্ঘটনার পূর্ণ তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন।