ভয়াবহ বন্যার কবলে শ্রীলঙ্কা, মৃত কমপক্ষে ৫৬, নিখোঁজ প্রায় ৬০

Sri Lanka floods

সহেলি মিত্র, কলকাতা: এবার ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে শ্রীলঙ্কা। ভয়াবহ বন্যায় (Sri Lanka floods) প্রাণ হারালেন বহু মানুষ।কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের বিস্তীর্ণ অংশ ডুবে আছে। বন্যা ও ভূমিধসের ফলে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত হয়েছে। এরই মাঝে একটি সরকারি রিপোর্ট সকলকে চমকে রেখে দিয়েছে। সরকারি রিপোর্ট অনুসারে, এখনও পর্যন্ত ৫৬ জন মারা গেছেন এবং ৬০০-রও বেশি বাড়িঘর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভয়াবহ বন্যায় শ্রীলঙ্কায় বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যা

শ্রীলঙ্কায় বন্যার কারণে ৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সূত্রের খবর, শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলীয় পার্বত্য অঞ্চলে পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। বাদুল্লা এবং নুওয়ারা এলিয়ার মতো চা উৎপাদনকারী এলাকাগুলিতে ঘন ঘন ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে, যার ফলে সেখানে বসবাসকারী পরিবারগুলির জন্য উল্লেখযোগ্য দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক বাড়িঘর কাদার তলায় চাপা পড়েছে এবং বেশ কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যায় এই দুটি জেলাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। আহত ও নিখোঁজ অগুনতি মানুষ।

দেশজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে

পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সরকার ঘোষণা করেছে যে সমস্ত সরকারি অফিস এবং স্কুল আপাতত বন্ধ থাকবে। নদী এবং জলাশয়ের জলস্তর বিপজ্জনকভাবে উঁচু থাকায় মানুষকে তাদের বাইরের কার্যকলাপ সীমিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভূমিধস এবং বন্যার কারণে অনেক প্রধান রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু এলাকায় রেললাইনের উপর ধ্বংসাবশেষ জমেছে, যার ফলে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাজধানী কলম্বো এবং প্রত্যন্ত জেলাগুলির মধ্যে যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

উদ্ধার অভিযানে নামল বায়ুসেনা ও নৌসেনা

ছাদে আটকে পড়া মানুষদের হেলিকপ্টার দিয়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নৌবাহিনীর দলগুলি বন্যার জলে আটকে পড়া পরিবারগুলিকে নিরাপদ এলাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নৌকা ব্যবহার করছে। অনেক গ্রাম এখনও ডুবে আছে, তাই ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।পূর্বাঞ্চলীয় আমপাড়া জেলায়, তীব্র স্রোতে একটি গাড়ি ভেসে নদীতে পড়ে যায়। উদ্ধারকারী দল পৌঁছানো পর্যন্ত গাড়িতে থাকা তিনজনকে বাঁচানো যায়নি।

এদিকে দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে দিয়েছে যে বৃষ্টিপাত থামার সম্ভাবনা কম, এবং আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নতুন এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষকে সতর্ক ও নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।

Leave a Comment