ভারতকে ইসলামিক রাষ্ট্র করার স্বপ্ন, পশ্চিমবঙ্গেও নেটওয়ার্ক! চার্জশিটে ছাঙ্গুর বাবার রহস্য ফাঁস

Changur Baba

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: উত্তরপ্রদেশের বালরামপুরে অবৈধ ধর্মান্তর কাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত জালালুদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবা (Changur Baba) এবং তাঁর ছেলে মেহবুবের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক চার্জশিট জমা দিয়েছে রাজ্যের অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াড বা ATS। জানা গিয়েছে, ছাঙ্গুর বাবা নাকি 2047 সালের মধ্যে ভারতকে ইসলামী রাষ্ট্র বানানোর ছক কষেছিল। এমনকি বিদেশি অর্থায়নের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিরাট নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছিল।

ভয়াবহ তথ্য চার্জশিটে

ATS-এর চার্জশিটে রয়েছে মোট 29 জনের সাক্ষীর বয়ান। এদের মধ্যে 10 জন সরাসরি ভুক্তভোগী বলে জানা গিয়েছে। এমনকি এদের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন যিনি অভিযুক্ত মেহবুব ও তাঁর সহযোগী নবীন রোহরার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন। কেউ কেউ জানাচ্ছেন, দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের নানারকম প্রলোভন, ভয় আর মানসিক চাপ দিয়ে ধর্মান্তরিত করা হত।

উল্লেখ্য, এক ভুক্তভোগী দাবি করছে, ছাঙ্গুর বাবা ও তাঁর সঙ্গীরা বারবার বলত যে, 2047 সালের মধ্যেই ভারতকে ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। অন্য এক মহিলা অভিযোগ করছে, শাড়ি ফেরত দেওয়ার নাম করে তাঁকে এক ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণের চাপ সৃষ্টি করা হয়।

কোটি কোটি টাকার বিদেশী অর্থ আত্মসাৎ

ওই তদন্তে ATS জানতে পেরেছে, ছাঙ্গুর বাবা সহযোগী নবীন রোহরা আগে থেকেই দুবাইতে ব্যবসা করত। সেখানে তার অ্যাকাউন্টে 16.50 কোটি টাকা আসে, যার মধ্যে 1.30 কোটি টাকা ছাঙ্গুর বাবা ও মেহবুবের হাতে পৌঁছয়। উল্লেখ্য, এই টাকা দিয়ে বালরামপুর সহ আশেপাশের জেলায় জমি, বিলাসবহুল হোটেল, শোরুম, বাংলো ইত্যাদি কেনা হয়। পরিকল্পনা ছিল, ওই টাকায় ইসলামিক দাওয়া সেন্টার ও মাদ্রাসা খোলা হবে। এমনকি তদন্তে 40 টির বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে 100 কোটি টাকার বেশি লেনদেনের হদিশও মিলেছে।

তবে ছাঙ্গুর বাবার নেটওয়ার্ক ছিল অনেক দূর বিস্তৃত। হ্যাঁ, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, বিহার এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও তাঁর হাত ছিল। এরা নিজেদের মধ্যে নানারকম কোডওয়ার্ড ব্যবহার করত বলে খবর। যেমন মেয়েদের জন্য প্রজেক্ট, ব্রেনওয়াশের জন্য কাজল করা, ধর্মান্তর করার জন্য জোর করা ইত্যাদি। আর ছাঙ্গুর বাবা নিজেকে পীর বাবা হিসেবে পরিচয় দিয়ে শিজার-এ-তাই নামের একটি বইয়ের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম প্রচার করে বেড়াত।

আরও পড়ুনঃ এদের থেকে বাংলার বাড়ির টাকা ফেরত নেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার

ED-র বড়সড় পদক্ষেপ

এবার এই অর্থ পাচারের মামলায় পা রেখেছে ED। ইতিমধ্যেই বালরামপুরের অভিযুক্ত নীতু ওরফে নাসরিনের নামে থাকা 13.02 কোটি টাকার 13 টি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর তদন্তে দুবাইয়ের একটি সংস্থা ইউনাইটেড মেরিন কোম্পানির মাধ্যমে টাকা পয়সা পাচারের প্রমাণ মিলেছে। এমনকি খুব শিগগিরই এই মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে খবর।

Leave a Comment