প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: উৎসবের পর্ব মিটতেই তোড়জোড় শুরু ২৬ এর নির্বাচনের। এমতাবস্থায় একের পর এক অভিযোগ বিতর্কের শিকার হয়ে চলেছে শাসকদলেরএকাধিক নেতা নেত্রী। এবার বিতর্কের মুখে পড়লেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। বিদেশে দীপাবলি উদযাপন নিয়ে এক বর্ণবিদ্বেষমূলক পোস্টের ‘সমর্থন’ করার ফলে কটাক্ষের মুখে পড়লেন তিনি। তাই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে প্রবল সমালোচনা।
পোস্ট ঘিরে বিতর্ক
রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি ‘নেট’ নামে এক কানাডিয়ান ভ্লগার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। এবং সেখানে ক্যাপশনে লিখেছিলেন যে “এইভাবে ব্রেনডেড ইন্ডিয়ানরা আমাদের সুন্দর পশ্চিমী দেশগুলোকে আবর্জনায় পরিণত করছে, তাদের রিটার্ডেড দীপাবলি গারবেজ দিয়ে, যার আমাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।” পাশাপাশি তিনি পুলিশ কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষকে আবর্জনা ফেলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন, যা নিয়ে বেশ চর্চা হয়েছিল। আর সেই পোস্টটাকে সমর্থন করেছিল কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি লেখেন, “I agree” অর্থাৎ আমি একমত। এর পরেই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। গর্জে ওঠেন বিজেপি।
ক্ষুব্ধ গেরুয়া শিবির
ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির রাজ্য ইউনিটের তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, “যিনি একসময় বলেছিলেন বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে ভাল, যিনি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছেন বিলাসবহুল ব্যাগের বিনিময়ে, তিনিই এখন দীপাবলির বিরুদ্ধে মন্তব্যে সম্মতি জানাচ্ছেন।” এখানেই থামেনি গেরুয়া শিবির। তারা আরও বলেন যে, “এই সেই মহুয়া মৈত্র, যিনি মা কালীকে ‘মাংস ও মদের দেবী’ বলেছিলেন, যাঁদের শাসনে বাংলায় দীপাবলিতে পটকা ফাটাতে গিয়ে হিন্দুদের উপর নির্যাতন হয়েছে, কালীমন্দিরে হামলাও হয়েছে।” এক কথায় মহুয়া মৈত্র-র এই ধর্ম বিরোধী মন্তব্য নিয়ে ক্ষেপে ওঠে সকলে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর আইনি রক্ষাকবচ তুলে নিল হাইকোর্ট! অস্বস্তিতে বিরোধী দলনেতা
সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চাইলেন মহুয়া
বিধানসভা নির্বাচনের আগে এইভাবে একের পর এক বিতর্কের সম্মুখীন হওয়ায় শেষে বাধ্য হয়ে নিজের ভাইরাল হওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। আজ, অর্থাৎ শুক্রবার তিনি বলেন, “আমার টুইটার ফিডে অনেকগুলি ভিডিও দেখাচ্ছিল। আমি Nate-এর বর্ণবৈষম্যমূলক পোস্টে ‘আমি সম্মত’ লিখে ফেলেছি। আমার ভুল। ভ্রমণ করছিলাম এবং এখন পর্যন্ত চেক করিনি… কিন্তু এটি একটি সত্যিকারের ভুল ছিল। দুঃখিত।” এদিকে ব্যাখ্যা দেওয়ার পরেও ট্রোলের বন্যা হয়েই চলেছে। কমেন্ট বক্সে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে। কেউ বলেছেন, “সত্যি ভুল হতেই পারে, অন্তত সাহস করে স্বীকার করেছেন।” তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।