বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আশঙ্কাই সত্যি হল! সমস্ত জল্পনা ভেঙে ভারতের ঘাড়ে 25 শতাংশ শুল্ক চাপালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মুখে বন্ধু বলে চেঁচিয়েও শুল্কের ঘেরাটোপে ভারতকে বেঁধে ফেলল আমেরিকা!
সদ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও ভারতের ওপর শুল্ক চাপানো হচ্ছে। কিন্তু এর নেপথ্যে কোন কারণ? ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভারত রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল এবং অস্ত্র কেনে। মূলত সেই কারণেই এবার বন্ধু ভারতের ওপর 25 শতাংশ শুল্ক চাপালো আমেরিকা। তবে আমেরিকার তরফে ধাক্কা খেয়ে মুখ বুঝে নেই ভারতও!
রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্যই সাজা পেল ভারত?
রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে একেবারে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে এসেছে আমেরিকা সহ NATO দেশগুলি। বহুবার ট্রাম্পের তরফে নরমে গরমে রাশিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে ভারতকে বোঝানো হয়েছে। তবে পশ্চিমী দুনিয়ার চাপ সত্বেও বন্ধু মস্কোর সাহে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য থেকে একফোঁটাও সরে আসেনি দিল্লি।
মূলত সেই কারণেই এবার চড়া শুল্কের সাজা পেল ভারত। এ প্রসঙ্গে বুধবার ট্রুথ সোশালে, ট্রাম্প লিখেছেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, ভারত বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও আমাদের দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য অত্যন্ত কম। আর সেই কারণেই ওদের শুল্ক হার অত্যাধিক। একই সাথে এদিন রাশিয়ার সাথে ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকেও কাঠগড়ায় তোলেন ট্রাম্প।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, ভারত সামরিক অস্ত্রশস্ত্রের বেশিরভাগটাই রাশিয়া থেকে কেনে। রাশিয়ার শক্তি সম্পদের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত এবং চিন। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনে গণহত্যা নিয়ে রাশিয়াকে যখন সকলে মিলে বোঝাচ্ছি, ঠিক সেই আবহেও ভারত ও দেশ থেকে আমদানি চালিয়ে গিয়েছে। তাই 25 শতাংশের শুক্ল চাপ নেবে ভারত। সবমিলিয়ে, রাশিয়া থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও তেল কেনার বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবে দেখে কার্যত হুঙ্কার দিয়েই ভারতের ওপর 25 শতাংশের শুক্ল খাড়া বসালো আমেরিকা! আগামীকাল অর্থাৎ 1 আগস্ট এই শুল্ক কার্যকর হবে।
ট্রাম্পের শুল্কের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের অবস্থান
একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের তরফে মোটা শুক্ল ঘোষণা হতেই অবস্থান স্পষ্ট করে ভারত সরকার। কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, সবার আগে দেশ। দেশের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ নেব আমরা। শুধু তাই নয়, শুল্কের প্রভাব অধ্যায়ন করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়। সবশেষে, ট্রাম্পের বক্তব্যের পরও ভারত স্পষ্ট করে দেয়, আমরা এখনও বাণিজ্য চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দেশের কৃষক, উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের কল্যাণ ও প্রচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখি আমরা। কাজেই জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য সব রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, যেমনটা ব্রিটেনের সাথে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তি সহ অন্যান্য বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে করা হয়েছে ।
অবশ্যই পড়ুন: চালু e-Aadhaar অ্যাপ! ঘরে বসেই করা যাবে আপডেট, নতুন সিস্টেম আনছে UIDAI
উল্লেখ্য, ভারতের উপর 25 শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানেই এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে চড়া শুল্ক দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত। কানাডাও উচ্চ হারে শুল্ক নেয়। তবে ট্রাম্প যোগ করেন, আমরা এখনও ভারতের সাথে দর কষাকষি চালিয়ে যাচ্ছি।