‘ভারত কী চুপ থাকবে?’ হিন্দু হত্যা থেকে বাংলাদেশে অরাজকতা, মুখ খুললেন শেখ হাসিনা

Sheikh Hasina on Bangladesh

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: হাদির মৃত্যু, হিন্দু যুবককে পুড়িয়ে মারা এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এবার মুখ খুললেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina on Bangladesh)। সম্প্রতি তিনি এএনআই-কে ইমেইলের মাধ্যমে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। আর সেখানে তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যা চলছে তার একমাত্র কারণ ইউনূস প্রশাসন। এমনকি তিনি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের পতনের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। আর সব দোষ চাপিয়েছেন ইউনূস প্রশাসনের ঘাড়ে।

হাদির মৃত্যু নিয়ে কী বললেন হাসিনা?

বলে রাখি, বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে কার্যত তোলপাড় ওপার বাংলা। আর এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ইউনূস প্রশাসনের আমলে কোনওরকম আইন বা শাসক নেই। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমচ্যুত হওয়ার পেছনে যে আইন শৃঙ্খলা অবনতি কাজ করেছিল, ইউনূস জামানায় তা এখন দ্বিগুণে পৌঁছেছে। হিংসাকে দমন করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনও দায়িত্বই পালন করছে না। তারা এখন নিশ্চুপ। আর এই ঘটনার জন্য ভারত সহ পড়শি দেশগুলির সাথে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের।

ভারতের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা স্পষ্ট বলেছেন, ভারত এবং বাংলাদেশ একসঙ্গে যা তৈরি করেছিল এখন তা সবই শেষের পথে। চোখের সামনেই তা নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর দিনের পথ দিন অত্যাচার বাড়ছে। আর সেই অরাজকতা দেখছে ভারত। তারা কী চুপ থাকবে? সীমান্তে শান্তির পরিবেশ কোনওভাবেই বজায় রাখতে পারছে না তারা। ইউনূসের আমলেই বাংলাদেশের এরকম অরাজকতা। এমনকি তিনি ভারতের বিরোধীতা নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেন যে, ইউনূস সরকার যে চরমপন্থীদের বাংলাদেশের বেড়ে উঠতে দিচ্ছে তাদের জন্যই এরকম পরিস্থিতি।

এদিকে তিনি বলেছেন, যারা এই সংবাদমাধ্যমের অফিস ভাঙচুর চালিয়েছে, রাজভবন পুড়িয়েছে, তারাই আমাকে প্রাণ হাতে নিয়ে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করেছে। আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, দায়িত্ববান সরকার হলে কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও গুরুত্ব দিত। কিন্তু ইউনূস সরকার তা পাচ্ছে না। এমনকি সন্ত্রাসীদেরকেই তারা গুরুত্ব দিচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতির পিছনে একমাত্র এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়ী। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরেই ভারত আর বাংলাদেশ বন্ধু রাষ্ট্র। কিন্তু এখন সেই বন্ধুত্ব পুরো শত্রুতায় পরিণত হয়েছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশে কোনও স্থায়ী গণতান্ত্রিক সরকার আসলে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আবারও সুষ্ঠু হবে।

আরও পড়ুন: কোনও বিনিয়োগ ছাড়াই মাসে মিলবে ৭০০০, মহিলাদের জন্য দারুণ স্কিম LIC-র

ওপার বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে এদিন হাসিনা বলেছেন, নিরাপদ আর ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে থাকার জন্য উদ্বিগ্ন নাগরিক। ক্যাবিনেটে উগ্রপন্থীদের বসিয়েছে ইউনূস। এমনকি সন্ত্রাসবাদীদের জেল থেকে ছাড় দিয়েছে। উনি কোনও রাজনীতিবিদ হতেই পারেন না। আর দেশ চালানোর কোনও অভিজ্ঞতাই ওনার নেই। চরমপন্থীরা তাঁর কথায় এখন অন্ধভাবে চলছে। আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলাদেশের মান-সম্মান সব ধুলিস্যাতের মুখে। বাংলাদেশের ধর্ম নিরপেক্ষতা একমাত্র হাতিয়ার ছিল। তবে আজ তা কোথায়? চরমপন্থীদের জন্য দেশের এই অবস্থা। ইউনূস সরকার যতদিন বিদায় না হচ্ছে ততদিন বাংলাদেশের অবস্থা স্বাভাবিক হবে না।

Leave a Comment