প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে রীতিমত বন্যা পরিস্থিতির দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। কিছুতেই নামতে চাইছে না সেই জল। অলিগলি সহ ঘরের ভিতরেও ঢুকে গিয়েছে সেই জল। ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকায় অবস্থা আরও শোচনীয়। নিত্যদিন কোমর জল কাটিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে সেখানকার পড়ুয়ারা। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের প্রতি বেশ ক্ষুব্ধ স্থানীয়েরা।
প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা
আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘূর্ণাবর্ত এবং মৌসুমি অক্ষরেখা জেরে দিনরাত হয়েই চলেছে ভারী বৃষ্টি। যার দরুন জল থৈ থৈ অবস্থা চারিদিকে, সেই কারণে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে প্রায় এক মাস বন্ধ রাখা হয়েছে বেশিরভাগ স্কুল। এদিকে কড়া নাড়ছে পরীক্ষা। তবে এই চিত্র শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি হাওড়াতেও দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় চিন্তায় পড়েছিলেন শিক্ষক থেকে পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। সকলের অভিযোগ, দিনের পর দিন যাচ্ছে, রাস্তাঘাটে জমা জল নামছে না। এদিকে প্রশাসন একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছে। যদিও কিছু এলাকায় তবুও পড়ুয়াদের শিক্ষার কথা ভেবে স্কুল খোলা রয়েছে। কিন্তু সেই সব স্কুলে রীতিমত নৌকা চড়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছে পড়ুায়ারা।
জলমগ্ন অবস্থা একাধিক জেলায়
ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘একমাস ধরে ঘাটালের বিভিন্ন এলাকার স্কুলগুলো জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। ফলে অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে শিক্ষা পরিকাঠামো। পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী সামনেই প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ইউনিট টেস্ট পরীক্ষা। তাই জলমগ্ন এলাকার পডুয়াদের যাতে পরীক্ষায় বসতে কোনও সমস্যা না হয়, সে বিষয় নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।” তার উপর একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে গালুডি, ডিভিসি ও কংসাবতী থেকে ছাড়া জলে শিলাবতী, রূপনারায়ণ, কংসাবতী নদী এবং কেঠিয়াখাল, ঝুমি, চন্দ্রেশ্বর খালের জল বাড়তে শুরু করেছে। তাতে বিপদ আরও বাড়ছে।
আরও পড়ুন: মহুয়া-পিনাকীর রিসেপশনে চাঁদের হাট দিল্লিতে! কারা কারা উপস্থিত ছিলেন?
উল্লেখ্য টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গিয়েছে চাষের জমি। কিন্তু কোনো রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন তাই মুখ্যমন্ত্রী যে রাস্তা দিয়ে আরামবাগ গিয়েছেন, সেখানে বিক্ষোভ দেখানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। অন্য দিকে, বারাসত পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে জলযন্ত্রণার সম্মুখীন বাসিন্দারাও। পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, বারাসত-ব্যারাকপুর রাস্তার ধারে একাধিক বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। যার ফলে জল নিকাশির সমস্যা হচ্ছে। এলাকার মানুষদের পাশাপাশি অবৈধ নির্মাণকারীদের ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে বলে খবর।