ভিন রাজ্য নয়, বাংলা বলায় এবার শিলিগুড়িতে চাকরি থেকে ছাঁটাই!

Siliguri

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এতদিন ধরে খবরের শিরোনামে প্রায়ই উঠে এসেছিল যে ভিনরাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাভাষী হেনস্থার অভিযোগ। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এবার পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতেও (Siliguri) এক বাঙালি কর্মী একই রকম হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠল। এমনকি যুবককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করারও অভিযোগ উঠল শিলিগুড়িতে।

বাংলায় কথা বলায় চাকরি থেকে ছাঁটাই!

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির বাবুপাড়ার বাসিন্দা হলেন অভিষেক সেনগুপ্ত। তাঁর জন্ম এবং বেড়ে ওঠা শিলিগুড়িতেই। তাঁর বাবা রেলকর্মী ছিলেন। শিলিগুড়িতে একটি চায়ের কোম্পানিতে এইচআর ম্যানেজার হিসেবে গত মার্চ মাসে যোগ দিয়েছিলেন অভিষেক সেনগুপ্ত। অভিযোগ, সম্প্রতি এক সংখ্যালঘু নিরাপত্তাকর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছিল ওই কোম্পানি থেকে। সেই সময় ওই কর্মীকে ফেয়ারওয়েল দিয়ে কর্তৃপক্ষের বিষনজরে পড়ে যান তিনি। যার ফলে গত এক মাস ধরে তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন করা হয়। এবং দফতরে হিন্দিতে কথা বলার উপর জোর দিতে বলা হয় এবং তাঁকে বাংলদেশীর তকমা দেওয়া হয়। আর সেটা নিয়ে আপত্তি করায় চাকরি কেড়ে নেওয়া নেন কোম্পানির কর্তৃপক্ষ।

বড় আশ্বাস মেয়রের

অভিষেক সেনগুপ্ত জানান, তিনি বিষয়টি প্রথমে পুলিশকে জানিয়েছিলেন। শিলিগুড়ি থানা থেকে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট সব জায়গায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তাতে কোনও সুরাহা হয়নি। এর পরেই বাধ্য হয়ে তিনি মেয়র গৌতম দেবের কাছে দ্বারস্থ হন। ‘টক টু মেয়র’-এ তিনি গোটা বিষয়টি জানান। তখনই মেয়র পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। গতকাল অর্থাৎ সোমবার শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব অভিষেকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। এবং আশ্বাস জানিয়ে বলেন, ‘‘যত ধনশালী হোন না কেন, কোনও রেয়াত করা হবে না। পুলিশ প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: বাঁকুড়ায় পঞ্চায়েত হাতছাড়া বিজেপির! তৃণমূলে নাম লেখালেন পঞ্চায়েত সদস্যা

প্রসঙ্গত, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস বরাবরই সোচ্চার ছিল, কিন্তু নিজের রাজ্যেই বাঙালিদের হেনস্থা হতে হচ্ছে পদে পদে, যার নমুনা এই। আর এবার এই নিয়ে তাই কটাক্ষ করতে ছাড়ল না বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রাজু সাহা। তিনি বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা, বাঙালি বলেই তাঁকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া এটা কোনওভাবেই মানা যায় না। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন দেখছে। বাংলা বা বাংলাদেশি তকমা যেভাবে দেওয়া হচ্ছে সমাজের কাছে এতে ভুল বার্তা যাচ্ছে।”

Leave a Comment