ভুয়ো ওবিসি সার্টিফিকেট আসলে তৃণমূলের চক্রান্ত! বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর

Suvendu Adhikari

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পরের বছরই বিধানসভা নির্বাচন। তাই তার আগে থেকেই রাজনৈতিক মহলের শুরু হয়েছে হয়ে গিয়েছে ভোট প্রস্তুতি পর্ব। এমতাবস্থায় খবরের শিরোনামে ফের উঠে এল বাংলায় ওবিসি সার্টিফিকেটের অপব্যবহার প্রসঙ্গ। তবে এবার সেই অভিযোগ উঠে এল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। ভুয়ো ওবিসি শংসাপত্র দাখিল করে নাকি সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন নেতারা। এবার সেই নিয়ে ফের মমতাকে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু অধিকারী।

OBC নিয়ে কটাক্ষ শুভেন্দুর

আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী, তার এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেছেন যে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর প্রশাসন OBC সার্টিফিকেটকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা প্রশাসনের সহায়তায় ভুয়ো শংসাপত্রের মাধ্যমে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। আর এই ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর ব্লকের ঈশ্বরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীমতী খুকুরানি মণ্ডল ঘোড়াই।” তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, “ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে তোষণ করার জন্য ওবিসি সার্টিফিকেটের অপব্যবহার করছেন, যাতে তাঁরা সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সুবিধা পান।”

কী বলছেন শুভেন্দু?

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর ব্লকের ঈশ্বরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীমতী খুকুরানি মণ্ডল ঘোড়াই- এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে যে, “ এই তৃণমূল নেত্রী ভুয়ো ওবিসি শংসাপত্র জমা দিয়ে ওবিসি সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাই এই ঘটনার পর তিনি কেবল পঞ্চায়েত প্রধানের পদই নয়, পঞ্চায়েত সদস্যের পদও হারাতে চলেছেন। সেক্ষেত্রে সঠিক তদন্ত হলে রাজ্যজুড়ে এমন হাজার হাজার ঘটনা প্রকাশ্যে আসবে।” এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনাকে ‘হিমশৈলের চূড়া’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

বাংলায় ওবিসি সার্টিফিকেটের অপব্যবহার নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি এবং তোষণ নীতির কারণে রাজ্যের তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বিপন্ন।” এই সার্টিফিকেট বিতর্ক রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এদিকে একের পর এক OBC সংক্রান্ত অভিযোগের পাল্টা জবাবে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, ওবিসি তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং আদালতের নির্দেশ মেনে চলছে। এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্ক আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে এক বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ৩ বছর ধরে বন্ধ! কবে হবে দুর্গাপুরের পুরভোট? বড় আপডেট দিলেন ফিরহাদ হাকিম

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট একধাক্কায় বাতিল করে দেয়। আদালতের নির্দেশ ছিল, ২০১০ সালের পরে জারি করা সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র অবৈধ এবং এগুলো ভবিষ্যতে কোনো ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না। এমতাবস্থায় শিক্ষাক্ষেত্রে এবং চাকরিক্ষেত্রে ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে। সরকারি কলেজগুলিতে একদিকে যেমন ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে আছে ঠিক তেমনই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে।

Leave a Comment