ভূমিকম্পের পর রাশিয়ায় জেগে উঠল আগ্নেয়গিরি, বেরোচ্ছে ফুটন্ত লাভা

Klyuchevskoy

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বর্তমানে রাশিয়ার মাটিতে নেমে এসেছে ঘোর প্রাকৃতিক বিপর্যয়। হঠাৎ করেই কেঁপে উঠেছে দেশের পূর্বাঞ্চল। হ্যাঁ, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা পৌঁছেছে 8.8। আর এই ভূমিকম্পের রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হল আরো এক বিপদ। এবার জেগে উঠেছে রাশিয়ার সর্বোচ্চ এবং অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি Klyuchevskoy।

জেগে উঠল Klyuchevskoy আগ্নেয়গিরি

রাশিয়ার জিওফিজিক্যাল সার্ভের পক্ষ থেকে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের পরপরই Klyuchevskoy থেকে অগ্নুৎপাত শুরু হয়েছে। আর আগ্নেয়গিরির চূড়ায় দেখা গিয়েছে উজ্জ্বল কমলা আগুনের লেলিহান শিখা। পাশাপাশি ফুটন্ত লাল লাভা নীচের দিকে গড়িয়ে আসতে দেখা গিয়েছে।

এমন দৃশ্য শেষবার দেখা গিয়েছিল বহু বছর আগে। আগ্নেয়গিরির পশ্চিম ঢাল ধরে লাভার প্রবাহ একেবারে স্পষ্ট। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছে, এই অগ্নুৎপাতের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। চূড়ার প্রায় 15,000 ফুট উচ্চতায় কমলা লাভা জেগে উঠেছে। আর সে কারণেই আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, খুব তাড়াতাড়ি বড়সড় বিস্ফোরণ হতে পারে।

এদিকে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কামচাটকা উপদ্বীপের পশ্চিম উপকূল। ভয়াবহ কম্পনের পর প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী এলাকায় জারি হয়েছে সুনামি সতর্কবার্তা। তড়িঘড়ি বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলার কাজও শুরু হয়েছে।

এদিকে কামচাটকা উপকূলের স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা হঠাৎ করেই তিন থেকে চার মিটার পর্যন্ত উপরে উঠে যায়। আর পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে মানুষজনকে সরে যেতে অনুরোধ করা হয়। প্রশাসনের তৎপরতায় অনেককে বর্তমানে নিরাপদে সরিয়েও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিস্ফোরণের দৈত্য Klyuchevskoy

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, Klyuchevskoy আগ্নেয়গিরিকে ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে সবথেকে উচ্চতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি হিসেবেই ধরা হয়। প্রায় প্রতি কয়েক বছর অন্তর অন্তর এই আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠে। 2000 সাল থেকে এখনো পর্যন্ত এখানে অন্তত 18 বার এখানে অগ্নুৎপাত হয়েছে বলে খবর। তবে এবারের ভূমিকম্পের সঙ্গে লাভার প্রবাহ আবার নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বে প্রথম! কর্ণাটকের মহিলার শরীরে মিলল অজানা রক্তের গ্রুপ, হতবাক চিকিৎসকরা

বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছে যে, এই আগ্নেয়গিরির ভিতরে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস, লাভা এবং ছাই জমে রয়েছে। আর এতে বিরাট বড় বড় কোনো বিস্ফোরণও ঘটতে পারে। আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে ছায়ের বৃষ্টিও দেখা দিতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত সেরকম কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। কিন্তু এ নিয়ে প্রশাসন সতর্ক হয়েছে, আর পুরো এলাকা জুড়েই চলছে তদারকি।

Leave a Comment