প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ভোটার তালিকা সংশোধনকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে বিহারে। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, সংশোধনের ফলে একধাক্কায় ৫২ লক্ষ ভোটার বাদ পড়েছেন। আর এই বাদ পড়া ভোটারদের মধ্যে ১৮ লক্ষের মৃত্যু হয়েছে, ২৬ লক্ষ ভোটার বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় স্থানান্তরিত হয়েছেন এবং ৭ লক্ষ ভোটারের নাম একাধিক স্থানে নথিভুক্ত ছিল। এমতাবস্থায় ঘটল আরও এক ঘটনা। খসড়া তালিকা থেকে নাম বাদ গেল স্বয়ং লালুপুত্রের।
তালিকা থেকে নাম বাতিল তেজস্বী যাদবের?
২৬ এর নির্বাচন শুরু হতে হাতে বাকি মাত্র আর কয়েক মাস। তাই তড়িঘড়ি ভোটার তালিকা সংশোধন করতে উঠে পড়ে লেগেছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে বিহারের পরেই যে বাংলার পালা, তা সরকারি ভাবে ঘোষিত না হলেও সকলেই জানেন। এমতাবস্থায় বিহারের খসড়া তালিকা নিয়ে শুরু হল শোরগোল। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। শেষ আপডেট অনুযায়ী খসড়া তালিকা থেকে নাম বাদ গেছে, ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম। যার মধ্যে অন্যতম হলেন ‘লালুপুত্র’ তেজস্বী যাদব। এদিকে তালিকায় তাঁর নিজের নাম দেখে কার্যত ফুঁসে উঠেছেন তেজস্বী।
সাংবাদিক বৈঠকে লালুপুত্র
ANI এর রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ, শনিবার, ২ আগস্ট, পাটনাতে এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এ কথা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন আরজেডি নেতা তথা বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘EPIC নম্বর দিয়ে সার্চ করেও আমার কোনও তথ্য পেলাম না। SIR-র সময় ফর্ম ফিল আপ করেছিলাম। স্বয়ং বুথ লেভেল অফিসার নিজে এসে আমার নথি নিয়ে যান। অথচ আমার নাম নেই। তার মানে এটাই দাঁড়াচ্ছে যে এখন আমি চলতি নির্বাচনে লড়াই করতে পারবো না।”
পাল্টা মন্তব্য নির্বাচন কমিশনের
নির্বাচন কমিশনের এই বিস্ফোরক তথ্য নিয়ে ক্ষুব্ধ হন তেজস্বী যাদব। এদিকে তাঁর এই অবাক করা অভিযোগের ভিত্তিতে মুখ খুলেছে নির্বাচন কমিশন। তেজস্বীর দাবি খারিজ করে কমিশন জানিয়েছে যে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের ক্রমিক নম্বর ৪১৬-তে তেজস্বীর নাম রয়েছে। তাই তেজস্বীর দাবিকে মিথ্যা বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে। এছাড়াও কমিশনের দেওয়া তালিকায় তেজস্বীর এপিক নম্বর আরএবি০৪৫৬২২৮ দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, সাংবাদিক বৈঠকে তেজস্বী নিজেই জানান তাঁর ভোটার কার্ডে থাকা এপিক নম্বর আরএবি২৯১৬১২০। আর তাতেই বাড়ছে সন্দেহ।
আরও পড়ুন: SLST-র বহু আবেদন বাতিল করল SSC-র! তালিকা প্রকাশ করে নয়া নির্দেশ কমিশনের
তেজস্বী যাদব এদিন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আরও দাবি করেছেন যে, শুধু তাঁর একার নাম নয়, তাঁর দলের কর্মরত বহু কর্মীর নামও খসড়া তালিকায় নেই। তাই শীঘ্রই এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ চাইছেন তেজস্বী। তিনি চান সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই বিষয়ে কমিশনের বিরূদ্ধে চার্জ নেওয়া হোক। যদিও কমিশন আগেই জানিয়েছিল, শুক্রবার বিহারে সংশোধিত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। কারও নাম যদি খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়ে গিয়ে থাকে, তাঁর নাম জোড়ার জন্য আবেদন জানানো যাবে আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। তার পর সংশোধিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।