প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: অবাক কাণ্ড চন্দননগরে! ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়রের। শুধু তাই নয়, তারই সঙ্গে তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ল তাঁর স্ত্রীর নামও। এমতাবস্থায় গোটা এলাকায় তৈরি হয়েছে SIR নিয়ে নয়া বিতর্ক। সেক্ষেত্রে এবার সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন তৃণমূলের এই নেতা।
ঘটনাটি কী?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী সকলেই যার যার কেন্দ্রের তালিকা থেকে নিজেদের নাম চেক করে নিচ্ছেন। কিন্তু এবার সেই তালিকা থেকেই চন্দননগর কর্পোরেশনের ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল নেতা অমিত আগরওয়াল এবং তাঁর স্ত্রী ববিতা আগরওয়ালের নাম বাদ পড়ল। ১৮২ চন্দননগর বিধানসভার ২ নং অংশে খলিসানী বৌবাজারে তাঁদের বুথ। কিন্তু সেখানে অমিত আগরওয়ালের মা ও ভাইয়ের নাম রয়েছে তালিকায়। আর তাই নিয়ে ফের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূল নেতার
ভোটার তালিকায় নাম না ওঠায় ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল নেতা অমিত আগরওয়াল অভিযোগ জানিয়েছেন যে, “২০০২ সালের আগে-পরে যত নির্বাচন হয়েছে সব নির্বাচনেই ভোট দিয়েছি। তিনবার কাউন্সিলার নির্বাচিত হয়েছিলাম। এদিকে এখন যে ভোটার তালিকা দেওয়া হয়েছে সেই তালিকায় আমার নাম নেই। অথচ আমার কাছে জন্মের শংসাপত্র থেকে শুরু করে যাবতীয় তথ্য আছে। সেগুলো চাইলে আমি দেখাতে পারব। কিন্তু সাধারণ মানুষ যারা আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটলে তাঁরা কি করবেন?”
পাল্টা দাবি বিজেপির
চন্দননগরের পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অমিত আগরওয়াল বিরোধী দল বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে “ নোটবন্দির সময় সাধারণ মানুষ যেমন হয়রানির শিকার হয়েছিল এখনও সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতে বিজেপি চক্রান্ত করে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে SIR করাচ্ছে।” পাল্টা অভিযোগ তোলে চন্দননগর বিধানসভার বিজেপির কনভেনর গোপাল চৌবে। তিনি বলেন, “এই রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল ভয় পেয়েছে। কারণ রাজ্যে যে ভূতুড়ে ভোটার রয়েছে, SIR হলে তাদের নাম আগে বাদ যাবে। যাদের ভোটে এতদিন তৃণমূল জিতেছে সেই ভোটার তারা পাবে না। তাই তৃণমূল ভয় পাচ্ছে। অমিত আগরওয়ালের নাম যদি না থাকে তার দায় বিজেপির নয়। কারণ সেই সময় রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ছিল।”
আরও পড়ুন: কালনায় মহিষমর্দিনী পুজোয় বেড়াতে গিয়ে ভাগীরথীতে তলাল ৪ যুবক! নিখোঁজ ১
এদিকে বিহারের পর পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR হওয়ার কথা। তার জন্য প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমে। রাজ্যে বুথ লেভেল অফিসারদের অর্থাৎ BLO দের প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর তার মাঝেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষসহ অনেক নেতার নামই এই তালিকা থেকে বাদ পড়ার অভিযোগ উঠে আসছে। আর তা নিয়েই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত বেড়েই চলেছে।