“ভোট চুরি” নিয়ে রাহুল গান্ধীর নতুন অভিযোগ! পাল্টা ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে বিবৃতি কমিশনের

ECI
ECI

কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ বিহারে নির্বাচন শুরুর আগেই সম্মুখ সমরে রাহুল গান্ধী বনাম নির্বাচন কমিশন। SIR চালু হতেই কমিশনের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের হাতিয়ার এখন “ভোট চুরি”। যদিও সেই অভিযোগকে ভুয়ো দাবি করে, কংগ্রেসের থেকে কংক্রিট প্রমাণ চেয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ECI)। এরপর এই “ভোট চুরি”-র পিডিএফ ফাইল মায়ানমার থেকে তৈরি হয়ে আসার দাবি তুলেছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। আর এসবের মাঝেই ফের ‘ভোট চুরি’ নিয়ে নয়া অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হলেন রাহুল গান্ধী। আর আগের মতোই একইভাবে এই অভিযোগকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে খণ্ডন করল ভারতের নির্বাচন কমিশন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, নয়া কী অভিযোগ করলেন রাহুল গান্ধী? পাল্টা কী যুক্তি দিল নির্বাচন কমিশন?

‘ভোট চুরি’ নিয়ে রাহুল গান্ধীর নয়া অভিযোগ

১৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার, একটি সংবাদ সম্মেলনে কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র সহ দেশের আরও কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট চুরির অভিযোগ তোলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, “২০২৩ সালে কর্ণাটকের অলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রে, যে বুথগুলিতে কংগ্রেস  শক্তিশালী ছিল, মূলত সেই বুথগুলিতে পরিকল্পনা করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আমি জানি না ঠিক কত জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তবে সংখ্যাটা অবশ্যই ৬০১৮-র বেশি হবে।” এরপর তিনি মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা কেন্দ্রেও একই ধরনের ভোট চুরির অভিযোগ করেন। তিনি জানান, “মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা কেন্দ্রে অনলাইনে ৬৮৫০ জন ভোটারের নাম অবৈধ ভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর শুধু কর্ণাটক কিংবা মহারাষ্ট্র নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই ভোটার তালিকায় এই যোগ-বিয়োগের খেলা চলেছে।“

আরও পড়ুনঃ ওমানের ম্যাচে সুযোগ পাবেন অর্শদীপ, বাদ যাবেন কে? দেখুন টিম ইন্ডিয়ার সম্ভাব্য একাদশ

এদিন ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে ভারতের নির্বাচন কমিশন এবং দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে আক্রমণ করেন রাহুল গান্ধী। পাশাপাশি, বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফর্ম পূরণ করে ভোটারদের নাম কীভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে সেই সম্পর্কে একটি প্রেজেন্টেশন করে ব্যাখ্যাও করেন তিনি। তিনি জানান, “একজন বুথ কর্মকর্তা লক্ষ্য করেন যে তার এক আত্মীয়ের ভোট মুছে ফেলা হয়েছে। তিনি আগ্রহী হয়ে ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে দেখেন যে তার আত্মীয়ের ভোট দিয়েছেন তারই একজন প্রতিবেশী। তবে, যিনি ভোটটি মুছেছেন বা যার ভোট মুছে ফেলা হয়েছে, তারা কেউই এই সম্পর্কে কিছুই জানেন না। অন্য কোনও সফ্টওয়্যার প্রোগ্রামের মাধ্যমে হাইজ্যাক করে ভোটটি মুছে ফেলা হয়েছে, এবং ঘটনাচক্রে এটি ধরা পড়েছে।”

পাশাপাশি, রাহুল গান্ধী আরও দাবি করেন যে, “অলন্দে বিভিন্ন ভোটারদের নামে প্রায় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রায় ৬,০১৮টি আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু, যারা এই আবেদন দায়ের করেছে, তারা নিজেরাও জানেন না যে তারা অভিযোগ দায়ের করেছে। কারণ তারা কোনও অভিযোগ করেননি।” উদাহরণ হিসেবে, রাহুল গান্ধী, গোদাবাই, সূর্যকান্ত এবং নাগরাজ সহ কিছু ব্যক্তির নামও উল্লেখ করে বলেন, “এদের নামে ভুয়া লগইন তৈরি করা হয়েছিল। এবং এদের আবেদনের ভিত্তিতে ১২ জন ভোটারের নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু এই ব্যাক্তিরা এই বিষয়ে কিছুই জানতেন না।”

‘ভোট চুরি’ নিয়ে কমিশনের মন্তব্য!

তবে, এই অভিযোগ তোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন রাহুল গান্ধীর অভিযোগের জবাব দিয়েছে। রাহুলের সমস্ত অভিযোগগুলিকে মিথ্যা এবং ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, “কোনও নাগরিক অনলাইনে ভোটার তালিকা থেকে কারও নাম বাদ দিতে পারে না। পাশাপাশি, কারোর নাম বাদ দেওয়ার আগে সেই ব্যাক্তির মতামত নেওয়া হয়। ২০২৩ সালে, অলন্দ বিধানসভা আসনের কিছু লোক ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন এফআইআর-ও দায়ের করেছে।”

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে অলন্দ বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি নেতা সুভাষ গুট্টেদার। কিন্তু, ২০২৩ সালে এই আসন থেকে জয়ী হন কংগ্রেস নেতা বি.আর. পাতিল।

Leave a Comment