‘মদ্যপ অবস্থায়’ গালিগালাজ, হুমকি, নিগ্রহ! শিলিগুড়ির কাউন্সিলর শ্রাবণী দত্তের ভিডিও ভাইরাল

Siliguri

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গভীর রাতে মদ্যপ এবং বেসামাল অবস্থায় এলাকায় চরম গোলমাল! হুমকি, হুঁশিয়ারি এবং নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্রাবণী দত্তের বিরুদ্ধে! গণেশ পুজোর বিসর্জনের রাতে এইরূপ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী ও একাংশ বাসিন্দার বিরুদ্ধে পরিবেশ নষ্ট করার পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন শ্রাবণী।

ঘটনাটি কী?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার অর্থাৎ ৩১ আগস্ট মধ্যরাতে শিলিগুড়ি পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে গণেশ পূজার বিসর্জন ছিল। স্থানীয়রা হই হুল্লোড় করে সেই বিসর্জন দিয়ে যখন তাঁরা ফিরছিলেন তখন এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা খাওয়াদাওয়ার জন্য একটি দোকানে জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই সময় ওই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্রাবণী দত্ত ও তার মেয়ে গাড়ি থেকে নেমে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে গোলমাল শুরু করে বলে অভিযোগ। রীতিমত কাউন্সিলরের তরফ থেকে হুমকি এবং শারীরিক নিগ্রহ করার অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগকারীদের দাবি, কাউন্সিলর নাকি তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।

মধ্যরাতেই এলাকায় পৌঁছন মেয়র

শিলিগুড়ি পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্রাবণী দত্ত ও তার মেয়ের ওইদিন রাতের ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। সেখানে দেখা যায় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন কাউন্সিলর। তাঁর বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূলের সমর্থক হিসেবে এলাকায় পরিচিত মিঠু বসাক, তমাল ধররা। এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশ। দু’পক্ষই নিজেদের দাবিতে অনড়। অশান্তির খবর পেয়ে মধ্যরাতেই এলাকায় পৌঁছন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। এমনকি পরের দিন অর্থাৎ সোমবার সকাল থেকেই পুনরায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওই এলাকা। কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। গোটা ঘটনার দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

কী বলছেন কাউন্সিলর শ্রাবণী দত্ত?

গত রবিবারের ঘটনায় রীতিমত গোটা এলাকা জুড়ে এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এক বাসিন্দার কথায়, “আমরা খাওয়াদাওয়ার জন্য দোকানে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করেই কাউন্সিলর এসে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। ভয় ও হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেন।” অন্যদিকে, কাউন্সিলর শ্রাবণী দত্ত সম্পূর্ণ অভিযোগ খারিজ করে দেন। তাঁর দাবি, “অনেক রাত পর্যন্ত এলাকায় মদ্যপান চলছিল। আমি তার প্রতিবাদ করেছিলাম। তখনই উল্টে আমার মেয়ের উপর হামলা চালানো হয়। গোটা ঘটনার খবর পুলিশকে জানানো হলেও, তারা অনেক দেরিতে ঘটনাস্থলে আসে। তাঁর কথায় তিনি কেবলমাত্র এলাকায় অনিয়মের প্রতিবাদ করেছেন।

আরও পড়ুন: ভুয়ো ST সার্টিফিকেট দেখিয়ে NEET কাউন্সিলিংয়ে? তদন্তের নির্দেশ স্বাস্থ্য দফতরের

উল্লেখ্য, সামনেই বিধানসভা নির্বাচন, তার আগে স্থানীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সরাসরি এমন হুমকি, হুঁশিয়ারি অভিযোগ ওঠায় প্রশাসনিক মহলেও এক তীব্র অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। আসলে যেহেতু, শ্রাবণী দত্ত পুরসভার একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি, তাই এই বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে আরও তাৎপর্যপূর্ণ। এমতাবস্থায় দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র গৌতম দেব।

Leave a Comment