মদ খেয়ে ট্রেন ওঠায় জরিমানা, লজ্জায় আত্মঘাতী মুর্শিদাবাদের রঙমিস্ত্রী! কাঠগড়ায় রেল

Murshidabad
Murshidabad

কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার লালবাগ এলাকায় ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। মদ্যপ অবস্থায় বন্ধুদের সাথে ট্রেন সফর করার সময় জরিমানার মুখে পড়তে হল এক যুবককে। আর সেই লজ্জায় আত্মঘাতী হয়ে করুণ পরিণতির শিকার হলেন তিনি। পরিবারের তরফ থেকে দায়ী করা হল রেল কর্তৃপক্ষকে।

ফাইনের টাকা মেটালেও মেটেনি লজ্জা

স্থানীয় সূত্র এবং পরিবারের তরফ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২৭ বছর বয়সী অনিকেত মণ্ডল পেশায় একজন রংমিস্ত্রি। বাড়ি লালাবাগের হুলাসপুর ডাঙা এলাকায়। যিনি শনিবার কিছু বন্ধুর সাথে লালাবাগ থেকে টিটাগড় যাচ্ছিলেন। মদ্যপ অবস্থায় রয়েছে জানার পর, কর্তব্যরত টিটি তাঁকে চার হাজার টাকা জরিমানা করেন। সহগামী বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার করে তৎক্ষণাৎ তা মিটিয়ে দিলেও, ঘটনার পরেই পরেও লজ্জায় মর্মাহত হয়ে পড়ে ওই যুবক।

লালবাগ থেকে টিটাগড় যাচ্ছিলেন অনিকেত মণ্ডল

অনিকেতের স্ত্রী পূজা মণ্ডল জানান, “শনিবার সকালে টিটাগড় যাওয়ার কথা ছিল আমার স্বামীর। এরপর হঠাৎ করেই সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফেরে সে, জানায় ট্রেনের সমস্ত ঘটনা। এমনকি সহগামী বন্ধুদের থেকে ধার করে জরিমানা দেওয়ার কথাও। এরপর বাড়ির অন্যান্য বাচ্চাদের খেলতে খেলতেই পাশের ঘরে গিয়ে জল খেয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে আমার স্বামী। ওই জলে যে বিষ মেশানো ছিল তা আমরা বুঝতে পারিনি। এরপর চিৎকার করে লোকজন ডেকে লালবাগের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর ওই দিন গভীর রাতে মৃত্যু হয় অনিকেতের।“

আরও পড়ুনঃ হেলমেট ছাড়া আর মিলবে না পেট্রোল! ১ সেপ্টেম্বর থেকেই চালু কড়া নিয়ম

আত্মহত্যার অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে কিনা, সেই বিষয়ে অনিকেতের স্ত্রী জানান, “স্বামীর সঙ্গে আমার কোন গণ্ডগোলই হয়নি। বাড়ির কারোর সাথেও কিছু হয়নি। শুধু শুধু কেউ বিষ খাবে এটা হতে পারে না। আমার ধারণা রেলে জরিমানা দেওয়ার অভিমানেই বিষ খেয়েছেন আমার স্বামী।“ অনিকেতের বাবা অরূপ মণ্ডল জানান, “আমি ওই সময়ে বাড়িতে ছিলাম না। কিন্তু বাড়িতে কোনও গণ্ডগোল ছিল না। শুধু কেন কেন বিষ খেল সেটাই বুঝতে পারছি না। ঘটনার তদন্ত চাইছি আমি।“

একরকমভাবে রেলের পদক্ষেপকেই দোষারোপ করেছেন অনিকেতের স্ত্রী পূজা মণ্ডল এবং বাবা অরুপ মণ্ডল। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মুর্শিদাবাদ এবং বহরমপুর থানার পুলিশ।

Leave a Comment