প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত কয়েকদিন ধরেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর অত্যাচারের গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ উঠে এসেছে খবরের শিরোনামে। বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সন্দেহের বশে ডিটেনশন ক্যাম্পেও ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাঙালি শ্রমিকদের। আর এসব অভিযোগ পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অত্যাচার থেকে বাঁচতে বাংলায় ফিরল শ্রমিকরা
গতকালই বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, বাংলায় যে সকল পরিযায়ী শ্রমিকেরা রাজ্যে ফিরে আসতে চান, তাঁদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তার জন্য জেলা শাসকদের আলোচনার মাধ্যমে তালিকা তৈরির প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম এবং মন্ত্রী মলয় ঘটককে আলোচনার মাধ্যমে জেলা ভিত্তিক তালিকা তৈরীর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় এবার শ্রমিক হয়রানির ভয়েই ঘরমুখী হলেন প্রায় ২০০ জন পরিযায়ী শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের একাধিক অভিযোগ
এই সময়ের রিপোর্ট অনুযায়ী , কিছুদিন আগে হরিয়ানার গুরুগ্রামে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় কথা বলতে দেখলেই সেখানকার পুলিশরা ধরে বেঁধে ডিটেনশন ক্যাম্পে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। শেষে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়ে কাজ ছেড়ে বাধ্য হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রায় ২০০ জন পরিযায়ী শ্রমিক এদিন ফিরে আসেন। জানা গিয়েছে গুরুগ্রাম থেকে তিনটি বাস ভাড়া করে গতকাল অর্থাৎ সোমবার সন্ধ্যায় জেলার বংশীহারীতে ফেরেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, ভিনরাজ্যে কাজ করা এখন বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বাংলায় কথা বললেই পরিচয়পত্র দেখতে চাইছে। কাগজ দেখালেও মারধর করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আগস্টে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে বিদ্যাসাগর সেতু! আর্জি জানিয়ে চিঠি
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাগাতার বিরোধিতা নিয়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি কড়া মন্তব্য করলেও শেষ পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চাপে পড়ে ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে ধাপে ধাপে বাংলার শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। গত দু’দিনে হরিয়ানা থেকে মালদহের চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরে ফিরেছেন মোট ১৫ জন। এবার মুক্তি পাওয়া বাকি শ্রমিকরাও ফিরবেন শীঘ্রই।